যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন শুরু যাচ্ছে মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টায়। এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান প্রার্থী সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ দুজনের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ছোট্ট শহর নিউ হ্যাম্পশায়ারের ডিক্সভিল নচে ভোটগ্রহণ হয়েছে। 

সেখানে ছয়জন নিবন্ধিত ভোটার। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তাদের ভোটগ্রহণ শেষ হলে ফলাফলও জানা হয়ে গেছে। সেখানে সমান তিনটি করে ভোট পেয়েছেন ট্রাম্প ও কমলা।

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে নারী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার কোনো নজির নেই। কমলা কি পারবে সেই নজির স্থাপন করতে, এমনই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে আমেরিকানদের মধ্যে। কমলা জয়লাভ করলে নতুন ইতিহাস রচিত হবে। আর ট্রাম্প জয়লাখ না করলে হয়তো জেলে যেতে হতে পারে। 

১৯১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ১৯তম সংশোধনী পাসের মাধ্যমে আমেরিকান নারীরা প্রথম ভোটের অধিকার পান। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ১৯৬৪ সালে রিপাবলিনা মার্গারেট চেস স্মিথ প্রথম প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ছিলেন। তিন দফায় যুক্তরাষ্ট্রের মেইন অঙ্গরাজ্যের সিনেটরের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

যেদিন মার্গারেট প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে নিজেকে ঘোষণা দেন সেদিনই গণমাধ্যম সেটিকে নন সিরিয়াস বা তেমন গুরুতর নয় বলে সম্বোধন করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আমেরিকায় নারীদের কাজ করার তেমন সুযোগ ছিল না। ষাটের দশকে নারী আন্দোলনের পর থেকে পরিস্থিতির পরিবর্তন শুরু হয়। তবে তখনও যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে নারী উপস্থিতি বাড়েনি। 

এরপর সাবেক ফার্স্ট লেডি ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দক্ষতার পরিচয় দেওয়ায় ২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম নারী প্রার্থী হন হিলারি ক্লিনটন। ৩০ লাখের বেশি পপুলার ভোট পেয়েও ইলেকটোরাল কলেজের নিয়মে পরাজিত হন ট্রাম্পের কাছে। ট্রাম্প পুরুষ ভোট পান ৫২ শতাংশ আর হিলারি পান ৪১ শতাংশ। এবারও সবশেষ জরিপে দেখা যাচ্ছে, পুরুষ ভোটারদের কাছে কমলার চেয়ে ট্রাম্পই জনপ্রিয়।

সব যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও কেবল নারী হওয়ায় হিলারি বিদ্বেষের শিকার হন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। তবে আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে নারী নেতৃত্বকে মেনে নেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে বলেও জানাচ্ছেন বিশ্লেষকরা। ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে রেকর্ড করলেও এবার মার্কিন পুরুষেরা কমলাকে ভোট দেবেন কিনা তা দেখার বিষয়। 

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সাতটি সুইং স্টেট বা দোদুল্যমান রাজ্যকে বলা হয় ব্যাটলগ্রাউন্ড। রাজ্যগুলো হলো- জর্জিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা, পেনসিলভানিয়া, মিশিগান, উইসকনসিন, নেভাডা ও অ্যারিজোনা। বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন বলছে, এই সাতটি অঙ্গরাজ্যের তিনটিতে এই মুহুর্তে জনমত জরিপে এগিয়ে আছেন ট্রাম্প। জর্জিয়া, অ্যারিজোনা ও নর্থ ক্যারোলাইনায় এক থেকে তিন পয়েন্টে এগিয়ে আছেন তিনি। পেনসিলভানিয়া ও নেভাডায়ও এগিয়ে ট্রাম্প। তবে সামান্য ব্যবধানে মিশিগান ও উইসকনসিনে এগিয়ে কমলা হ্যারিস।

এদিকে জাতীয় পর্যায়ে পিছিয়ে আছেন ট্রাম্প। ৪৮ শতাংশ জনমত আছে কমলা হ্যারিসের পক্ষে। আর ট্রাম্পের পক্ষে জনতম রয়েছে ৪৭ শতাংশ।

news