ইউএনআরডব্লিউএর প্রধান বলেছেন, ইসরায়েল গাজায় "মানুষসৃষ্ট" ও "রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত" দুর্ভিক্ষ চাপিয়ে দিচ্ছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির রিপোর্ট অনুযায়ী, গাজায় সহায়তার সমস্ত মজুদ এখন পুরোপুরি ফুরিয়ে গেছে। জাতিসংঘের খাদ্য অধিকার বিষয়ক বিশেষ র্যাপোর্টেয়ার মাইকেল ফাখরি বলেছেন, ইসরায়েল গাজাকে ৫০ দিনেরও বেশি সময় ধরে অবরুদ্ধ করে রেখেছে এবং এই "দুর্ভিক্ষ অভিযান" চালিয়ে যাচ্ছে কোনো ধরনের শাস্তি ছাড়াই।
আল জাজিরাকে দেওয়া সূত্র অনুযায়ী, শুক্রবার ভোর থেকে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় অন্তত ৪৫ জন নিহত হয়েছেন, আর মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছেই। গত ১৮ মাস ধরে ইসরায়েলের যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৫১,৪৩৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,১৭,৪১৬ জন আহত হয়েছেন। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস তাদের হালনাগাদ পরিসংখ্যানে মৃতের সংখ্যা ৬১,৭০০-এর বেশি বলে জানিয়েছে, যেখানে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া হাজার হাজার মানুষকে মৃত হিসেবেই ধরা হচ্ছে। অন্যদিকে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস-নেতৃত্বাধীন হামলায় ইসরায়েলে ১,১৩৯ জন নিহত এবং ২০০-এর বেশি মানুষকে hostage নেওয়া হয়েছিল।
ইসরায়েলি বাহিনী পূর্ব জেরুজালেমের কাছে আনাতা শহরে হানা দিয়ে একজন ফিলিস্তিনিকে গ্রেফতার করেছে বলে প্যালেস্টাইন ইনফরমেশন সেন্টার জানিয়েছে। এর আগে, নাবলুসের কাছে বালাতা শরণার্থী শিবিরে অভিযান চালিয়ে ইসরায়েলি সেনারা এক ফিলিস্তিনিকে আটক করেছিল। এখন একই সূত্র জানাচ্ছে, ক্যাম্পে দ্বিতীয় আরেকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গাজায় প্যালেস্টাইন সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেছেন, উদ্ধার সরঞ্জামের অভাবে ইসরায়েলের বোমা হামলায় ধ্বংস হওয়া একটি বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া ৩০ জনের বেশি মানুষকে উদ্ধার করা যাচ্ছে না। গাজা সিটির সাবরা এলাকায় খুর পরিবারের বাড়িতে ভোররাতে হওয়া এই হামলায় ৪ জন নিহত এবং ৫ জন আহত হয়েছেন। বাসাল এএফপিকে বলেছেন, "প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাবে আমাদের দলগুলো তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছে না।"
ইসরায়েলি বিমানবাহিনী বুধবার গাজায় ৪০টি ইঞ্জিনিয়ারিং যানবাহন ধ্বংস করেছে, যেগুলো উদ্ধার কাজে ব্যবহৃত হতো। সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, এই যানবাহনগুলো ধ্বংসস্তূপ সরানো, উদ্ধার অভিযান এবং মৃতদেহ সংগ্রহে ব্যবহৃত হত।
গাজার পরিস্থিতি দিন দিন আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে। সাধারণ মানুষের কাছে খাদ্য, পানীয় জল ও চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাব প্রকট। শিশু থেকে বৃদ্ধ—সবাই অনাহার ও অসুস্থতার মুখোমুখি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তরফ থেকে জরুরি হস্তক্ষেপ দাবি করা হলেও ইসরায়েলের এই নৃশংসতা থামছে না। প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। খবর আলজাজিরার
#গাজা_সংকট #ইসরায়েলি_অবরোধ #ফিলিস্তিনি_নির্যাতন #মানবিক_সংকট #বিশ্ব_প্রতিক্রিয়া_চাই


