আজ আমরা তুলে ধরবো ভারতের তথাকথিত অপারেশন সিন্ধুর-পরবর্তী সময়ে গুজব, বিভ্রান্তি ও তথ্য বিকৃতির বিস্ময়কর এক উদাহরণ, যেখানে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অপপ্রচার চালিয়েছে ভারতের কিছু সরকারি ও মিডিয়া সংস্থা।
২২ এপ্রিল, কাশ্মীরের পাহেলগামে ভয়াবহ হামলার পর ভারত অভিযোগ করে যে, পাকিস্তান ভিত্তিক সংগঠন দায়ী। সেই সূত্র ধরে চালানো হয় তথাকথিত "অপারেশন সিন্ধুর", যেখানে ভারতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, পাকিস্তান ও আজাদ কাশ্মীরে ৯টি সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে আঘাত হানা হয়েছে।
ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করে, এই হামলা ছিল "পরিমিত ও নন-এস্কালেটরি"। যদিও ভারতের প্রচারমাধ্যমে আক্রমণাত্মক স্লোগান ও সামরিক জয়ের উল্লাস উঠে আসে।
অপারেশন শেষ হওয়ার পরপরই ভারতের প্রভাবশালী মিডিয়া ও সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয় এক নতুন খেলা—পাকিস্তানকে ছোট ও দোষী প্রমাণের অপচেষ্টা।
অনেক ভারতীয় টুইটার হ্যান্ডেল ও সংবাদমাধ্যম দাবি করে, পাকিস্তান পাল্টা হামলা চালিয়ে ভারতের ১৫টি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, এমনকি শ্রীনগরের বিমানঘাঁটি ও সেনা ব্রিগেড ধ্বংস করেছে।
কিন্তু পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়—এমন কোনো পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটেনি। উল্টো ভারতই তথ্য বিকৃত করে আঞ্চলিক উত্তেজনা বাড়াতে চাইছে।
বিশেষজ্ঞরা তদন্ত করে দেখিয়েছেন, এসব ছবি ও ভিডিওর বেশিরভাগই ছিল পুরনো, কোনো ঘটনার সাথে সম্পর্ক নেই বা ফটোশপ করা।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই মিথ্যা প্রচারকে আঞ্চলিক শান্তির জন্য হুমকি হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। তারা বলেছে—ভারত এই ধরনের প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে আঞ্চলিক দৃষ্টি ঘুরিয়ে দিতে চাইছে, যাতে দেশটির অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সংকট থেকে নজর সরানো যায়।
আন্তর্জাতিক মহল, বিশেষ করে মুসলিম দেশগুলো, এই পরিস্থিতি গভীর উদ্বেগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে। পাকিস্তান ইতোমধ্যে বন্ধু রাষ্ট্র ও জাতিসংঘকে জানিয়েছে, ভারত যেন এমন ভিত্তিহীন অপপ্রচার বন্ধ করে।
এটি স্পষ্ট যে, ভারতের তথাকথিত “সফল অভিযান”-এর পেছনে এক বিপুল প্রচারণা যন্ত্র কাজ করছে, যার মূল উদ্দেশ্য পাকিস্তানকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে হেয় করা।
কিন্তু আজকের ডিজিটাল বিশ্বে এমন গুজব বেশি দিন টিকে না। সত্য একসময় প্রকাশ হবেই। পাকিস্তান শান্তি চায়, তবে সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে আপোষহীন।
ভারত যদি সত্যিকার অর্থে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে চায়, তবে তথ্য বিকৃতি বা মিডিয়া যুদ্ধ নয়—প্রয়োজন আঞ্চলিক ঐক্য এবং আন্তঃরাষ্ট্রীয় সহযোগিতা।


