ইউক্রেনীয় গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, উত্তর কোরিয়া রাশিয়ার পক্ষে ইউক্রেন যুদ্ধে লড়াইরত তার সেনাদের সংখ্যা তিনগুণ বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। প্রায় ২৫,০০০ থেকে ৩০,০০০ অতিরিক্ত সৈন্য পাঠানো হতে পারে আগামী কয়েক মাসে, যা গত নভেম্বরে রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে প্রেরিত ১১,০০০ সেনার সঙ্গে যুক্ত হবে। পশ্চিমা গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইতিমধ্যে প্রায় ৪,০০০ উত্তর কোরিয়ান সেনা নিহত বা আহত হয়েছে।
সিএনএন প্রাপ্ত এক গোপন নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় উত্তর কোরিয়ান সেনাদের অস্ত্র ও সরঞ্জাম সরবরাহ করবে এবং তাদের রাশিয়ান ইউনিটের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে। নথিতে আরও বলা হয়েছে, উত্তর কোরিয়ার সেনারা রাশিয়া-অধিকৃত ইউক্রেনের কিছু অঞ্চলে যুদ্ধে সরাসরি অংশ নিতে পারে, যার মধ্যে বড় আকারের আক্রমণও অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়ার মধ্যকার সামরিক সহযোগিতা গত বছর থেকেই তীব্র হয়েছে। ২০২৪ সালের শরতে প্রথমবারের মতো গোপনে ১১,০০০ সৈন্য পাঠিয়েছিল পিয়ংইয়ং। সম্প্রতি স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, উত্তর কোরিয়ার সুনান বিমানবন্দরে কার্গো বিমান এবং রাশিয়ার দুনাই বন্দরে সৈন্যবাহী জাহাজের চলাচল বেড়েছে, যা নতুন সেনা প্রেরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, উত্তর কোরিয়া ধাপে ধাপে সেনা পাঠাতে পারে। দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, জুলাই বা আগস্টে আরও ৬,০০০ মাইন পরিষ্কারক ও নির্মাণকর্মী প্রেরণের ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। তবে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী সতর্ক করেছেন যে, উত্তর কোরিয়ার সেনাদের উচ্চ হতাহতের হার পিয়ংইয়ংয়ের জন্য রাজনৈতিক ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
এদিকে, রাশিয়ার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু সম্প্রতি উত্তর কোরিয়া সফর করেছেন, যেখানে দুই দেশের মধ্যে সামরিক সহযোগিতা আরও গভীর হয়েছে। ইউক্রেনের সামরিক কমান্ডার ওলেক্সান্ডার সিরস্কি জানিয়েছেন, রাশিয়া বর্তমানে পূর্ব ইউক্রেনে বড় আকারের আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এই প্রেক্ষাপটে, উত্তর কোরিয়ার সেনা প্রেরণ যুদ্ধের গতিপথকে প্রভাবিত করতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে পিয়ংইয়ং ও মস্কোর এই জোট আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।


