প্যারিসের বিশ্বখ্যাত ল্যুভর মিউজিয়ামে ১০২ মিলিয়ন ডলারের ঐতিহাসিক গহনা চুরির ঘটনাটি যতটা পরিকল্পিত মনে হয়েছিল, বাস্তবে তা ছিল না। তদন্তে বেরিয়ে এসেছে—এটি কোনো আন্তর্জাতিক ডাকাত চক্রের কাজ নয়, বরং স্থানীয় কিছু সাধারণ অপরাধীর দুঃসাহসী অভিযান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্যারিসের প্রসিকিউটর।
গত মাসের এক রোববার সকালে দুই ব্যক্তি ল্যুভর মিউজিয়ামের বাইরে একটি মুভার্স লিফট পার্ক করে সেটি ব্যবহার করে ভবনের দ্বিতীয় তলায় ওঠে। তারপর জানালা ভেঙে ভেতরে ঢোকে, অ্যাঙ্গেল গ্রাইন্ডার দিয়ে ডিসপ্লে কেস কেটে ফেলে এবং দুই সহযোগীর চালানো স্কুটারে চড়ে সাত মিনিটেরও কম সময়ে পালিয়ে যায়।
পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় সন্দেহভাজন চারজনের মধ্যে এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে চুরি যাওয়া গহনাগুলো এখনও উদ্ধার করা যায়নি। অভিযুক্তদের প্রোফাইল দেখে কর্তৃপক্ষের ধারণা—তারা কোনোভাবেই ‘ওশান’স ইলেভেন’-এর মতো পেশাদার অপরাধী নয়; বরং প্যারিসের উত্তরাঞ্চলের নিম্ন আয়ের এলাকার ছোটখাটো অপরাধী।
প্যারিসের প্রসিকিউটর লর বেকো ফ্রান্সইনফো রেডিওকে বলেন, “এই চুরিটি একেবারে সাধারণ অপরাধ নয়, আবার এটিকে উচ্চমানের সংগঠিত অপরাধও বলা যাবে না।” তিনি জানান, গ্রেফতার হওয়া চারজনের (যার মধ্যে একজন সন্দেহভাজন ডাকাতের বান্ধবীও আছেন) প্রোফাইল কোনো জটিল পরিকল্পনা পরিচালনা করতে সক্ষম অপরাধ চক্রের সঙ্গে মেলে না।
প্রসিকিউটর আরও বলেন, “এরা সবাই স্থানীয় লোক, বেশিরভাগই সিন-সাঁ-দেনিস এলাকার।” এই অঞ্চলটি প্যারিসের উত্তরে অবস্থিত এবং তুলনামূলকভাবে নিম্ন আয়ের একটি এলাকা হিসেবে পরিচিত।
ফরাসি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা গেছে, এই চোরেরা এতটাই অপেশাদার ছিলেন যে পালানোর সময় তারা সবচেয়ে মূল্যবান গয়না—সম্রাজ্ঞী ইউজেনির মুকুটটি ফেলে গেছে! শুধু তাই নয়, তারা ঘটনাস্থলে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি, গ্লাভস কিংবা অন্যান্য বস্তু পর্যন্ত নিয়ে যেতে ভুলে যায়। এমনকি নিজেরা যে ট্রাকটি ব্যবহার করেছিল, সেটিতে আগুনও দেয়নি—যা সাধারণত পেশাদার চোরেরা প্রমাণ নষ্ট করার জন্য করে থাকে।
