চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধ থামানোর আহ্বান জানানোর মাত্র কয়েক দিন পরই এক চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রও চীনের জন্য এক ধরনের 'হুমকি'। আর এনেছেন মার্কিন পারমাণবিক শক্তির বড়াই করে।

সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, চীন 'সব সময় আমাদের ওপর নজর রাখে'। পাশাপাশি তিনি দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে যে পরিমাণ পারমাণবিক অস্ত্র মজুত আছে, তা দিয়ে 'পৃথিবীকে ১৫০ বার ধ্বংস করা সম্ভব'!

ট্রাম্পের এই মন্তব্য এসেছে এমন এক সময়ে, যখন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো দাবি করছে যে চীন যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যুৎ গ্রিড ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থায় হ্যাকিং করছে এবং আমেরিকান নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করছে।

সিবিএসের সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প স্পষ্টই বলেন, "আমরাও তাদের জন্য হুমকি। আপনি যে বিষয়গুলো নিয়ে বলছেন, আমরা সেগুলোর অনেক কিছুই তাদের বিরুদ্ধে করি। এটি চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অত্যন্ত প্রতিযোগিতাপূর্ণ একটি বিশ্ব।"

তিনি আরও যোগ করেন, "আমরা যেমন তাদের ওপর নজর রাখি, তারাও আমাদের ওপর রাখে। তবে আমার মনে হয় আমরা এখন বেশ ভালো অবস্থানে আছি। আমি বিশ্বাস করি আমরা একসাথে কাজ করলে আরও বড়, ভালো ও শক্তিশালী হতে পারব; শুধু তাদের হারানোর চেষ্টা করলেই হবে না।"

চীন ও রাশিয়াকে নিয়ে ট্রাম্পের সতর্কবার্তা

এই সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প চীনের দ্রুত পারমাণবিক অস্ত্র উন্নয়নের话题ও তোলেন। তিনি বলেন, "আমাদের কাছে বিশ্বের যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি পারমাণবিক অস্ত্র আছে। রাশিয়া আছে দ্বিতীয় স্থানে। চীন এখনো অনেক পিছিয়ে, কিন্তু মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যে তারা আমাদের সমান হয়ে যাবে। তারা খুব দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে।"

পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের ওপর জোর দিয়ে ট্রাম্প বলেন, "এটি একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের কাছে এমন অস্ত্র আছে যা দিয়ে পৃথিবীকে ১৫০ বার ধ্বংস করা সম্ভব। রাশিয়ারও অনেক পারমাণবিক অস্ত্র আছে, আর চীনেরও বেশ কিছু আছে—বরং বলা যায় অনেকগুলোই আছে।"

বিরল খনিজ নিয়ে চীনের 'ক্ষমতা' স্বীকার

ট্রাম্প দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র চীনের বিরুদ্ধে 'খুব ভালো করছে'। তবে তিনি স্বীকারও করেন যে বেইজিংয়ের হাতে 'রেয়ার আর্থ' বা বিরল খনিজ সম্পদের এক ধরনের ক্ষমতা আছে, যা ওয়াশিংটনের ওপর প্রভাব ফেলছে।

তিনি বলেন, "আমরা চীনের বিরুদ্ধে খুব ভালো করছিলাম। হঠাৎ করেই তারা বুঝতে পারল যে আমাদের মোকাবেলা করতে হবে। তখন তারা তাদের সেই ক্ষমতা ব্যবহার করল। তারা ২৫ থেকে ৩০ বছর ধরে এই বিরল খনিজগুলো জমা করে রেখেছে এবং সযত্নে সংরক্ষণ করছে।"

কম্পিউটার থেকে শুরু করে অত্যাধুনিক অস্ত্র তৈরির জন্য এই খনিজগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অপরিহার্য। ট্রাম্পের ভাষ্যে, "তারা এটা আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছে, আর আমরা তাদের বিরুদ্ধে অন্য জিনিস ব্যবহার করেছি। যেমন বিমানের যন্ত্রাংশ। এটা একটা বিশাল ব্যাপার। তাদের শত শত বোয়িং বিমান আছে। আমরা তাদের যন্ত্রাংশ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছিলাম। আমরা উভয় পক্ষই হয়তো একটু বেশি মাত্রায় চলে গিয়েছিলাম, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সবচেয়ে বড় অস্ত্র ছিল শুল্ক।"

 

news