হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ এখন লাভজনক ব্যবসায় পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেছেন, কৃষকদের স্বার্থে সরকার প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা দেয়, কিন্তু কাজ বাস্তবায়ন যাদের দায়িত্ব তারা কৃষকের নয়, নিজেদের স্বার্থ বড় করে দেখেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা, স্থানীয় রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক প্রভাবশালীর মিলে হাওরে বাঁধ সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। যে কারণে কাজে দুর্নীতি, অনিয়ম হচ্ছে। বাঁধের নামে টাকার অপচয় ও লুটপাট হয়। এতে কপাল পোড়ে কৃষকের।

শনিবার (২৩ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে "বাঁচাও হাওর-বাঁচাও দেশ" ও "বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতি" যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচীতে প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

তিনি বলেন, হাওরের সমস্যা সমাধানে সরকারের বরাদ্দের অধিকাংশ দুর্নীতিবাজদের পেটে চলে যাওয়ায় বাঁধ নির্মাণ যেমন যথাযথভাবে হয়না, তেমনি রক্ষণাবেক্ষণ ও তদারকির দায়িত্বটিও ঠিকমতো হয়না। এখন পাহাড়ি ঢল আসায় দৌড়ঝাঁপ শুরু করে। এক পক্ষ আরেক পক্ষকে দোষারোপ করে দায় এড়াতে চায়।

তিনি আরো বলেন, এ সংকট থেকে উত্তরণে হাওর এলাকার নদ-নদী খনন জরুরি। বাঁধ নির্মাণে পিআইসি পদ্ধতি রাখতে হবে। তবে অনিময় ও দুর্নীতিমুক্ত করতে পিআইসির সংস্কার দরকার। কাজে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে। প্রশাসন ও পাউবো কর্মকর্তাদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে কাজ অবশ্যই যথাসময়ে শুরু এবং শেষ করতে হবে। এবার যাঁরা বাঁধের অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত, তদন্ত করে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে এনামুজ্জামান চৌধুরী বলেন, হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধের নামে সরকারি টাকা লুটপাট হচ্ছে। সরকার কৃষকদের প্রতি আন্তরিক। এ কারণেই প্রতি বছর হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে শত কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে যারা কাজ বাস্তবায়নের সাথে যুক্ত তাদের মধ্যে। সরকারি টাকা লুটের নতুন সেক্টর হিসেবে তারা হাওরকে ব্যবসায় পরিণত করেছেন।

তিনি বলেন, সুনামগঞ্জ হাওর কে কেন্দ্র করে সরকারি কোটি কোটি টাকা একশ্রেণীর দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তির পকেটে গেলেও জনগনের কাছে যায় নাই। দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার যোগসাজশে সরকারের বরাদ্দকৃত অর্থ ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা পায় না, বাঁধের কাজও হয় না। লুটেরারা হাওরবাসীর স্বার্থ রক্ষা না করে লুটপাটে ব্যস্ত রয়েছে। হাওরবাসী এ অবস্থা থেকে মুক্তি চায়।

সংগঠনের আহ্বায়ক ও জাসদ উপদেষ্টা এনামুজ্জামান চৌধুরী'র সভাপতিত্বে মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে প্রধান অতিথি বক্তব্য রাখেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জাসদের যুগ্ম সম্পাদক রোকনুজ্জামান রোকন। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান হামদুল্লাহ আল মেহেদী, এনডিপি’র মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ঢাকা মহানগর সভাপতি আবুল হোসাইন, জাতীয় স্বাধীনতা পার্টি চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান মিজু,  জাতীয় কৃষক জোটের আন্তর্জাতিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন, জাতীয় নারী আন্দোলনের সভাপতি মিতা রহমান, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি রাশিদুল হক ননী প্রমুখ।

news