যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেটার যুক্তরাষ্ট্রের নয়!

বাংলাদেশেকে হারিয়ে বিশ্বকে চমকে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সব জায়গায় উন্নতিতে অন্যদের রোল মডেল যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেটে এখনো হাঁটি হাঁটি পা পা করে এগিয়ে চলছে। এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সহ-আয়োজক হওয়ার সুবাদে প্রথমবার তাদের দেখা মিলবে ক্রিকেটের বিশ্ব মঞ্চে। র‌্যাঙ্কিংয়ের ১৯ নম্বরে থেকে ২০ দলের বিশ্বকাপে দেখা মিলবে মার্কিনিদের। এর আগে ক্রিকেটের আর কোনো বৈশ্বিক আসরে তাদের দেখা যায়নি।

ব্যয়বহুল ও সময় সাপেক্ষ হওয়ায় বিশ্বজুড়ে সেভাবে নেই ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা। যুক্তরাষ্ট্রও তার ব্যতিক্রম নয়। দেশটির তরুণ প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে বাস্কেটবল, বেসবল, আমেরিকান ফুটবল কিংবা গলফের মতো খেলা। এত সব খেলার ভিড়ে ক্রিকেট এখনো দেশটিতে পায়নি কোনো স্থান। এমন অপরিচিত খেলাকে জনপ্রিয় করে তুলতে তাই মার্কিনিদের ভরসা  অভিবাসী ক্রিকেটাররা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ক্রিকেটারদের এনে দল সাজিয়েছে তারা।

বিশ্বকাপের আয়োজক স্বত্ব পাওয়ার আগে ক্রিকেট নিয়ে এতটা মনোযোগ ছিল না তাদের। স্বাগতিক হওয়ার দায়িত্ব পাওয়ার পরই  মূলত ক্রিকেটে নজর দেয় যুক্তরাষ্ট্র। তৈরি করে পরিকল্পনা। সেই অনুযায়ী প্রথমে চালু করে নিজেদের দ্বিতীয় সারির  মাইনর ক্রিকেট লিগ। 

গত বছর থেকে শুরু হয় মেজর লিগ। ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক লিগ হওয়ায় ছিল বিদেশি ক্রিকেটারদের সঙ্গে খেলার সুযোগ। সে সুযোগেই মূলত বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেটাররা।

অভিবাসী ক্রিকেটারদের হাত ধরে ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখা যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত খেলেছে ২৫ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। এর মধ্যে ১৪টি জয়ের বিপরীতে হার ৯ ম্যাচে। আগামী ১ জুন যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে স্বাগতিকদের প্রতিনিধিত্ব করবেন ১৫ ক্রিকেটার।  এরা কেউই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক নন। ভারত, পাকিস্তান দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, জ্যামাইকা ও বারবাডোজ থেকে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটারদের নিয়ে নাগরিকত্ব দিয়ে জাতীয় দল গঠন করা হয়।  এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভারতের, ৮ জন।

যুক্তরাষ্ট্রের অধিনায়ক মোনাক প্যাটেলের জন্ম গুজরাটে। খেলেছেন সেখানকার অনূর্ধ্ব ১৯ দলেও। ২০১২ যুব বিশ্বকাপে ভারতকে প্রতিনিধিত্ব করা হারমিত সিংও আছেন দলে। জেসি সিং, মিলিনদ কুমার, নিসর্গ প্যাটেলের গায়েও ভারতীয় রক্ত। 

আর নশ প্রদীপ আটলান্টায় জন্ম নিলেও ক্রিকেটের হাতেখড়ি ভারতে। লোকেশ রাহুলের সঙ্গে একইসাথে ২০১০ যুব বিশ্বকাপ খেলেছিলেন সৌরভ নেত্রাভালকার। তবে ক্রিকেট খেলছেন যুক্তরাষ্ট্রের জার্সিতে।

অ্যারন জোনস এসেছেন বারবাডোজ থেকে। আলী খান ও শায়ান জাহাঙ্গীর পাকিস্তানী। দক্ষিণ আফ্রিকার দু’জন হলেন আন্দ্রিয়াস গোউস ও শেডলি ফন শালকউইক। কাগজে কলমে একজনই যুক্তরাষ্ট্রের। তিনি স্টিভেন টেইলর। কিন্তু তার নামের সঙ্গেও আছে জ্যামাইকার সংযোগ।
যুক্তরাষ্ট্রের দলে তারকা ক্রিকেটার কেরি অ্যান্ডারসন। নিউজিল্যান্ডের সাবেক এই অলরাউন্ডার এখন পুরোদস্তর যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা। উল্লেখ্য, আরব আমিরাত অনেক আগেই ভারত, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটারদের নাগরিকত্ব দিয়ে ক্রিকেট দল গঠন করেছে। সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা

এনবিএস/ওডে/সি

news