সবচেয়ে কম ওভার বল করে তুলে নিলো ১০ উইকেট, নতুন বিশ্ব রেকর্ড পাক স্পিনারের
অভিষেকেই বাজিমাত। নিজের প্রথম টেস্টে ৭ উইকেট নিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন আব্রার আহমেদ। মুলতানে ইংল্যান্ড-পাকিস্তান দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনই পাকিস্তানি স্পিনারের ঘূর্ণিতে বেসামাল ইংল্যান্ড। তার দাপটে মাত্র ২৮১ রানে শেষ হয়ে যায় ইংল্যান্ডের ইনিংস। আর আব্রারের হাত ধরেই পাকিস্তানের স্পিনাররা করে ফেললেন বিশ্ব রেকর্ড।
কোনও টেস্টের প্রথম ইনিংসে সবচেয়ে কম ওভার বল করে ১০ উইকেট তুলে নেওয়ার রেকর্ড করলেন পাক স্পিনাররা। পাকিস্তানের তিন স্পিনার আব্রার আহমেদ, জাহিদ মাহমুদ এবং মহম্মদ নওয়াজ মিলে এদিন মাত্র ৪১.৪ ওভার বল করেন। সেই সঙ্গে তারা মোট ১০ উইকেট তুলে নেন। তার মধ্যে আব্রার একাই নিয়েছেন ৭ উইকেট। আর তিন উইকেট নিয়েছেন জাহিদ মাহমুদ। নওয়াজ কোনও উইকেট নেননি। প্রথম ইনিংসে সবচেয়ে কম ওভার বল করে ১০ উইকেট তুলে নেওয়ার রেকর্ড গড়লেন পাক স্পিনাররা।
এর আগে ১৯৫২ সালে ভারত-ইংল্যান্ড টেস্টের প্রথম ইনিংসে ব্রিটিশ স্পিনাররা ৪৩.৫ ওভার বল করে ১০ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন। ২০২১ সালে আবার গালে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্পিনাররা ৪৫.৩ ওভার বল করে ১০ উইকেট তুলে নেন। এ দিন অবশ্য পাক স্পিনাররা সব নজির ছাপিয়ে যান।
এ দিন পাকিস্তানের আসল হিরো আব্রার। তিনি ২২ ওভার বল করে ১১৪ রান দিয়ে ৭ উইকেট তুলে নেন। যার সূচনা হয় জ্যাক ক্রলির (১৯ রান) উইকেট দিয়ে। পাক স্পিনারের বাকি শিকার বেন ডাকেট (৬৩), অলি পোপ (৬০), জো রুট (৮), হ্যারি ব্রুক (৯), বেন স্টোকস (৩০) এবং উইল জ্যাকস (৩১)। অর্থাৎ ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইন আপের প্রথম সাত ব্যাটারকেই আউট করেন আব্রার আহমেদ।
তবে যখন পাকিস্তান ক্রিকেটে পদার্পণ করেন, তখন আব্দুল কাদিরকেও চিনতেন না আব্রার। পাকিস্তানের জাতীয় ক্রিকেট আকাডেমির কোচ মুস্তাক আহমেদ তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, আব্দুল কাদিরকে চেনেন কিনা। জবাবে ছোট্ট আব্রার বলেছিলেন, ‘কে বলুন তো? কখনও নাম শুনিনি। মুস্তাক আহমেদ নিশ্চয়ই তখন হাসি চাপতে পারেননি। সেই আব্রার এ বার স্পিন জাদুতে ইংল্যান্ডের তাবড় তাবড় ব্যাটারদের প্যাভিলিয়নে ফিরিয়ে দিলেন।
জিম লেকার, অনিল কুম্বলেদের ছুঁয়ে ফেলার হাতছানি ছিল ২৪ বছরের স্পিনারের সামনে, কিন্তু সাত উইকেটে থামেন তিনি। মুলতানের শিনকিয়ারি গ্রাম থেকে উঠে এসেছেন আব্রার। বাবার হাত ধরে ছোটবেলায় করাচিতে চলে আসেন। কিন্তু লড়াইটা কঠিন ছিল। চোটের জন্য দু’বছর মাঠের বাইরে থাকতে হয়। চোট গুরুতর ছিল, প্যারালিসিসও হয়ে যেতে পারত।
একটা সময় মনে হয়েছিল আর ক্রিকেটে ফেরা হবে না। কিন্তু সেই সব দিন এখন অতীত। জীবনের নতুন ছন্দ পেয়ে গিয়েছে আব্রার। তিনি এখন পাকিস্তানের নতুন স্পিন কিং।
এনবিএস/ওডে/সি