বিশ্বমঞ্চ থেকে কেঁদেই বিদায় নিলেন মহানায়ক রোনালদো

 শূন্য হাতে বিদায় নিলো ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পর্তুগাল। ৩৮টি বসন্ত পার করে ফেলা রোনালদোকে আর হয়তো কখনোই দেখা যাবে না গ্রেটেস্ট শো অন আর্থে। টানেল দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় অশ্রুসিক্ত রোনালদোর ছবিই বলে দেয়, এমন বিদায় তিনি চাননি।

শেষের সুর বাজছিল আগে থেকেই। পর্তুগালের শুরুর একাদশে নেমেও ব্যবধান গড়ে দিতে পারছিলেন না সিআরসেভেন। দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে তাই সাইডবেঞ্চে জায়গা হলো তার। ২০০৬ সালের পর সেই প্রথমবারের মতো গুরুত্বপূর্ণ কোনো ম্যাচ পর্তুগাল খেলতে নামলো ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে ছাড়াই। নিজেদের ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই ফুটবলারের কিছু ছবি ভেসে বেড়িয়েছে অন্তর্জালে। কোচ ফার্নান্দো সান্তোসের সেই সিদ্ধান্তও আবার কাজে লেগে গেল দারুণভাবে। রোনালদোকে বেঞ্চে বসিয়ে যাকে নামিয়েছিলেন সান্তোস, সেই গনসালো রামোস হ্যাট্রিক করে যেন দেখিয়ে দিলেন অমোঘ সত্যকে, বর্তমানের বাস্তবতায় প্রাসঙ্গিকতা ও কার্যকারিতার পরীক্ষায় উতরাতে না পারলে অতীত কীর্তিমানরাও হয়ে পড়ে অপাংক্তেয়।

এমন অনেক ম্যাচ গেছে যখন একার অতিমানবীয় পারফর্মেন্সেই তিনি পর্তুগালকে পার করেছেন দারুণ দুর্বিপাকের বৈতরণী। সতীর্থদের কাজ ছিল কেবল উদযাপন। সুইসদের বিরুদ্ধে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো নেমেছিলেন যখন ৫ গোল দিয়ে ম্যাচের ভাগ্য লিখে দিয়েছে পর্তুগাল। রোনালদো নেমে কেবলই উদযাপন করেছেন। সেটাই করার ছিল তার। দেখলেন, তাকে ছাড়াই বিশাল জয় পাচ্ছে পর্তুগাল। বুঝে গেলেন হয়তো, পর্তুগালে অবিসংবাদিত রোনালদো-যুগ আর থাকছেন না।

এরপরের লড়াইটা হয়ে গেল মরক্কোর সাথে। ফেভারিট হিসেবেই নেমেছিল ব্রুনো-রামোস-ফেলিক্সদের পর্তুগাল। কিন্তু প্রথমার্ধের গোল হজম করে সেই যে পিছিয়ে পড়লো সান্তোস শিষ্যরা, মরিয়া হয়ে খেলেও তা আর শোধ করতে পারেনি পর্তুগাল। নিজের ক্যারিশমায় অনেক অনেক বাধা উতরে যেতে পারেন যিনি, সেই ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো নামলেন দ্বিতীয়ার্ধে। কিন্তু এবার যে সময়ও আর তার পক্ষে নেই। ম্যাচের শেষ দিকে লম্বা করে বাড়ানো এক থ্রু বল থেকে শট নিয়েছিলেন রোনালদো। সেটিও ঠেকিয়ে দিলেন মরোক্কান গোলকিপার বোনো। রোনালদোও হয়তো বুঝে নিলেন, একার পক্ষে দলকে টেনে নেয়ার সক্ষমতার সেই দিনের সূর্য আজ অস্তগামী। তবে যা কিছু বুঝে নেয়া যায়, তার সবই তো মেনে যায় না। রোনালদোও মানতে পারেননি এই প্রস্থান।

এনবিএস/ওডে/সি

news