লম্বা সময়ের জন্য নির্ভরযোগ্য কোচ চায় বিসিবি
জাতীয় দলের শেষ দুই প্রধান কোচকে ঘিরে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) অনুযোগ ছিল অনেকটা এরকম, ‘প্রধান কোচ অথরিটি নিতে পারেন না।’ স্টিভ রোডসকে নিয়ে বোর্ডের নীতি নির্ধারকরা বলতেন, কোচ অন্যদের পরিকল্পনা শুনতেন। নিজের পরিকল্পনা দিতেন না। আর সদ্য বিদায়ী কোচ রাসেল ডমিঙ্গোকে নিয়ে শোনা যেতো, ক্রিকেটারদের ধমকাতে পারেন না কোচ।
দুজনকে নিয়ে ঠিক উল্টো কথা। ডমিঙ্গো যেমন শুধু ক্রিকেটারদের ভুল ধরিয়ে দিয়ে শুধরে দিতেন। সিদ্ধান্ত ছেড়ে দিতেন তাদের হাতে। পেশাদার ক্রিকেটার বলেই তাদের হাতে সব ক্ষমতা। আর রোডস বিশ্বাস করতেন স্বাধীনতায়, নির্ভরযোগ্যতায়।
ভারতের বিপক্ষে ঢাকা টেস্ট হারের পর ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান দুটি শব্দ বলেছিলেন স্পষ্টভাবে, ‘ইমপ্যাক্টফুল ও ইনফ্লুয়েন্সিয়াল।’
মানে ড্রেসিংরুমে প্রভাব রাখতে পারে এমন কোচকে চায় বিসিবি। অনেকটা কড়া হেডমাস্টারের মতো। আর এই কড়া হেডমাস্টার বলতে বাংলাদেশ ক্রিকেটে প্রসিদ্ধ হয়ে আছেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। শ্রীলঙ্কান কোচ এখন অস্ট্রেলিয়ায়।
বিসিবি তাকে কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়ায় অনেকদূর এগিয়ে গেছে। চুক্তি শেষ না পর্যন্ত মুখে কলুপ এঁটেছেন প্রায় প্রত্যেকেই। দেশের ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিশ্বাস, চন্ডিকা আবার ফিরে আসলেই বাংলাদেশ ক্রিকেটে ফিরবে স্বস্তি। ক্রিকেটারদের কড়া শাসনে মিলবে ফল।
এতে হিতে বিপরীত হতে পারে বলে মনে করছেন দেশের ক্রিকেটের নামকরা স্থানীয় কোচ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেছেন, ‘ছেলেদের শাসন করতে হবে কেন সেটা তো আগে জানা জরুরি। এই পর্যায়ে এসে প্রত্যেকে প্রত্যেকের খেলাটা বোঝে।
তাদের শুধুমাত্র শুধরে দিতে হবে। এটাই তো। এখানে শাসনের বিন্দুমাত্র সুযোগ নেই। আর কোচের যদিও মোটিভেশন ওরকম থাকে তাহলে দূরত্ব তৈরি হবে। যাতে ফাঁটল ধরবে জাতীয় দলে।’
হাথুরুসিংহকে পুনরায় এনে দলের সামগ্রিক অবস্থার পরিবর্তন হবে কি না তা নিয়ে দ্বিধায় তিনি, ‘হাথুরুসিংহে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের দায়িত্ব কিন্তু নিয়েছিল। তাদের কি খুব উন্নতি হয়েছিল।
বাংলাদেশে ফিরে এসে তিনি কতটুকু ইমপ্যাক্ট রাখতে পারেন তা নিয়ে সংশয় আছে।’ শুধু হাথুরুসিংহেই নয়, বিসিবির আলাপ হচ্ছে আরও দুই একজন কোচের সঙ্গেও।
দীর্ঘ সময় পরের প্রধান কোচকে দলের দায়িত্ব দিতে চায় বিসিবি। এজন্য ভেবে চিন্তেই নিতে চায় সিদ্ধান্ত। বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সুজন বলেছেন, ‘মার্চে ইংল্যান্ড বাংলাদেশ সফর করবে। এখানে একটু সুবিধা আছে আমরা সময় পাচ্ছি, মাঝে বিপিএলেরর সময়।
চেষ্টা থাকবে ইংল্যান্ড সফরের আগে নির্ভরযোগ্য কাউকে জাতীয় দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে পারি কি না। আমরা উপযুক্ত কাউকে চাচ্ছি যাকে নিয়ে লম্বা সময়ে যেতে পারবো। এটাই আমাদের চাওয়া, জাতীয় দলের হেড কোচ লম্বা সময়ের জন্যই হওয়া দরকার।’
বিসিবি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না নেওয়া পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত তালিখাও প্রকাশ করতে পারছে না বলে তিনি জানান, ‘আমরা যখন সব নাম পাবো, তখন সিদ্ধান্ত নেবো এর মধ্যে সেরা অপশন কোনটা হবে।
অবশ্যই সেরা অপশনটাকেই নেবো। সেক্ষেত্রে নাম, অভিজ্ঞতা সবই বিবেচনা করা হবে। এই মুহূর্তে এটা বলা ঠিক হবে না।’
এনবিএস/ওডে/সি