বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সম্পর্ক ৫৪ বছর পর এক নতুন মোড়ে পৌঁছেছে। দীর্ঘদিনের শীতলতা ও অমীমাংসিত ইস্যু পেছনে ফেলে এবার শুরু হতে যাচ্ছে গঠনমূলক সংলাপ ও সহযোগিতার নতুন অধ্যায়। চলতি এপ্রিলেই ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ষষ্ঠ ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি), যেখানে অংশ নেবেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমেনা বেলুচ। প্রায় ১৩ বছর পর এই বৈঠকে উঠে আসবে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ইস্যুতে যৌথ উদ্যোগের বিষয়।

সাম্প্রতিক সময়ে দুই দেশের শীর্ষ নেতাদের একাধিক বৈঠক, উচ্চপর্যায়ের সামরিক ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সফর এবং ভিসা নীতিতে শিথিলতা—সবই ইঙ্গিত দেয় এক নতুন বাস্তবতার। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের মধ্যে জাতিসংঘ অধিবেশনে বৈঠক, সামরিক কর্মকর্তাদের সফর এবং দুই দেশের ব্যবসায়িক কাউন্সিল গঠনের উদ্যোগ এ সম্পর্কের উষ্ণতা বাড়িয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের ভারসাম্যে পরিবর্তন আসায় পাকিস্তানের সঙ্গে পুনঃসম্পর্ক স্থাপন সহজ হচ্ছে। একইসঙ্গে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে চীনের সম্পৃক্ততা এই ত্রিদেশীয় কৌশলগত অংশীদারিত্বকে এগিয়ে নিতে পারে।

তবে ১৯৭১ সালের ইতিহাস, যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যা ইস্যু এখনো অন্যতম স্পর্শকাতর বিষয় হিসেবে রয়ে গেছে। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা না চাওয়ায় সমালোচনা থাকলেও, দুই দেশের নেতারা অতীত ভুলে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা দিয়েছেন অনেক আগেই।

সাম্প্রতিক পরিবর্তনগুলো প্রমাণ করছে—দীর্ঘদিনের শীতল সম্পর্ক কাটিয়ে বাংলাদেশ-পাকিস্তান এখন এক নতুন কূটনৈতিক সম্ভাবনার দিগন্তে।

news