কাপাসিয়ায় ফেসবুকে ‘হাঃ হাঃ’ কমেন্টসের ঘটনা কেড়ে নিলো ৩ যুবকের প্রাণ।

রায়হান উদ্দিন বাচ্চু : কাপড়ের, দোকানের কর্মচারী নাঈম হোসেন (১৮) নিয়মিত টিকটক বানাতেন। সেগুলো ফেসবুকে শেয়ার করতেন। সম্প্রতি তার টিকটকে হাহা রিয়েক্ট দেন পার্শ্ববর্তী গ্রামের এক নারী। এরপর মেসেঞ্জারে একে অপরের অাক্রমণ। এ ঘটনার জেরে নাঈমের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় ওই নারী ও তার স্বামীর। দেওয়া হয় হুমকি-ধমকি। শেষ পর্যন্ত ঘটনা গড়িয়েছে খুনাখুনিতে। ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন তিনজন। আরও দুজন আহত হয়ে ভর্তি আছেন হাসপাতালে। গত শনিবার রাতে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে গাজীপুরের কাপাসিয়ায়।

নিহতদের মধ্যে দুজন আপন ভাই। তারা হলেন- দক্ষিণগাঁও চরপাড়া
এলাকার মৃত মোহাম্মদ আলমের ছেলে ফারুক হোসেন (২৬) ও নাঈম হোসেন (১৮)। অপরজনের নাম রবিন (২৪)। তিনি একই এলাকার হিরণ মিয়ার ছেলে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম নাসিম বলেন, টিকটক বা ফেসবুক পোস্টে কমেন্টের জের ধরেই এ হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।  মামলা হয়েছে, আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।
নিহত নাঈমের চাচাতো ভাই সোহাগ জানান, নাঈম নিয়মিত টিকটক বানাতেন। কয়েক দিন আগে তার টিকটকে হাহা রিয়েক্ট দেন মারিয়া নামে এক নারী। এ ঘটনার জেরে নাইমের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় ওই নারী ও তার স্বামীর। পরে মুঠোফোনে নাইমকে হুমকিও দেওয়া হয়। এ সময় নাইমও তার সঙ্গে উচ্চকণ্ঠে কথা বলেন।

নিহতদের স্বজনরা জানান, শনিবার মধ্যরাতে দক্ষিণগাঁও এলাকায় ধর্মীয় মাহফিল থেকে ফেরার পথে আচমকা নাঈমের ওপর আক্রমণ করে দশ-বারোজন। প্রথমে নাঈমকে ছুরিকাঘাত করে হামলাকারীরা। পরে তার চিৎকার-চেঁচামেচিতে রবিন ও ফারুক এগিয়ে এলে তাদেরও এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করা হয়। এতে তিনজন নিহত হয়। এ সময় আরও দুজন আহত হয়েছে। তারা হলো- হৃদয় (১৩) ও ফাহিম (১৭)। বর্তমানে তারা গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ছাড়া ঘটনাস্থল থেকে জনতা সাতজনকে আটক করে পুলিশে সোপোর্দ করেন।

অপর এক স্বজন বলেন, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হামলাকারীরা দেশিয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। আমরা এ ঘটনায় যারা দুষি তাদের বিচার চাই।
এ ঘটনায় নিহত ফারুকের বাবা আলম বাদী হয়ে এজাহার নামীয় ১০ জন ও অজ্ঞাত চারজনকে আসামি করে কাপাসিয়া থানায় মামলা করেছেন।
ওসি নাসিম আরও বলেন, সংবাদ পেয়ে রাতেই ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে জনতার হাতে আটকদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। এদের মধ্যে দুজনের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় চিকিৎসার জন্য রাতেই হাসপাতালে পাঠানো হয়।

news