ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, বলছে জরিপ

একাধিক জরিপ বলছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে বা এ মামলার পেছনে রাজনীতিই বড় ভূমিকা পালন করছে। সিএনএন জরিপের পাশাপাশি কুইননিপিয়াক ইউনিভার্সিটির জরিপেও বলা হচ্ছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে পর্নোতারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে গোপনে অর্থ পরিশোধ সংক্রান্ত মামলাটি রাজনৈতিক কারণেই করা হয়েছে। কিন্তু ৩২ শতাংশ মনে করেন যে আইনের শাসন অনুসরণ করেই এ মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সিএনএন জরিপে ৭২ শতাংশ মার্কিনী মনে করেন ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এ মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। রিপাবলিকানদের ৯৩ শতাংশের একই মত। এদের ৮৩ শতাংশ মনে করেন রাজনীতিই প্রধান ভূমিকা রেখেছে। ৭৬ শতাংশ মার্কিনী মনে করেন রাজনীতি কিছুটা হলেও ভূমিকা রেখেছে। স্বতন্ত্রদের ৫২ শতাংশ বলেছেন রাজনীতি একটি প্রধান ভূমিকা পালন করেছে। তবে ডেমোক্রেটদের মধ্যে এ হার নেমে এসেছে ২৫ শতাংশে। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এ মামলা দেশটির গণতন্ত্রের উপর প্রভাব ফেলতে পারে কি না তা নিয়ে মার্কিনীরা অবশ্য বিভক্ত। আবার ৬০ শতাংশ মার্কিনী ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এ মামলায় সায় দিলেও ৩৭ শতাংশ মনে করেন মোটামুটি হলেও রাজনীতিই এ মামলার পিছনে মূল কারণ হিসেবে কাজ করছে।  

তবে স্বতন্ত্রদের মধ্যে ৬২ শতাংশ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা সমর্থন করলেও ৩৮ শতাংশ তা করেন না। ডেমোক্রেটদের মধ্যে ৯৪ শতাংশ এ মামলা সমর্থন করলেও ৭১ শতাংশ খুব জোরালোভাবেই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলাকে সমর্থন করেন। আবার ৬২ শতাংশ নারী ও ৫৮ শতাংশ পুরুষ এ মামলার পক্ষে রয়েছেন। এদের মধ্যে ৮২ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ প্রাপ্তবয়স্ক, ৭১ শতাংশ হিস্পানিক ও ৫১ শতাংশ শে^তাঙ্গ নারী-পুরুষ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এ মামলাকে সমর্থন করছেন।

তবে রাজনৈতিকভাবে স্বতন্ত্র ৮ শতাংশ মনে করেন ট্রাম্প নির্দোষ। বাকিদের অধিকাংশ আবার নিশ্চিত না যে ট্রাম্প আদতেই কোনো দোষ করেছেন কি না। সামগ্রিকভাবে ১০ শতাংশ স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে অর্থপ্রদানের বিষয়ে ট্রাম্পকে নির্দোষ হিসাবে দেখেন, তবে এধরনের কাজ বেআইনি নাকি নিছক অনৈতিক তা নিয়ে বিভক্ত। প্রায় ১০ জনের মধ্যে ৪ জন (৩৭%) বলেছেন যে ট্রাম্প বেআইনিভাবে স্টর্মি ড্যানিয়েলসেকে টাকা দিয়েছেন। ৩৩ শতাংশ বলেছেন ট্রাম্পের অর্থপ্রদান অনৈতিক হলেও তা বেআইনি নয়। আর ২০ শতাংশ বলেছেন যে তারা নিশ্চিত নন।

এমনকি যারা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এ মামলার বিপক্ষে তাদের মধ্যেও, ট্রাম্পের পদক্ষেপগুলি সন্দেহজনক ছিল এমন ধারণাটি মোটামুটি ব্যাপক, এদের প্রায় অর্ধেক বলেছেন ড্যানিয়েলসকে অর্থ প্রদানের ক্ষেত্রে ট্রাম্প কিছু ভুল করেছেন (৫২%)। আর ৪৯ শতাংশ বলছেন অনৈতিক ও ৩ শতাংশ বলেছেন ট্রাম্প অবৈধ কাজ করেছেন। বাকিদের মধ্যে ২৩ শতাংশ বলছেন ট্রাম্প কোনো ভুল করেননি। ২৪ শতাংশ মনে করেন তারা এ ব্যাপারে নিশ্চিত নন। যারা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলার পক্ষে তাদের মধ্যে মাত্র ১ শতাংশ বলেছেন যে তার কাজগুলি মোটেও ভুল ছিল না, এদের ৫৯ শতাংশ ট্রাম্পের অর্থপ্রদানকে অবৈধ এবং ২৩ শতাংশ অনৈতিক বলেছেন।

এ মামলা ট্রাম্পের ওপর কোনো বড় প্রভাব ফেলেনি মনে করছেন অধিকাংশ মার্কিনী। আবার প্রতি ১০ জন মার্কিনীর মধ্যে ৩ জন মনে করছেন এ মামলা গণতন্ত্রের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না। একই সংখ্যা মনে করছেন গণতন্ত্রকে দুর্বল করবে এ মামলা। ১৫ শতাংশ বিষয়টি নিয়ে নিশ্চিত নন। তবে রিপাবলিকানদের মধ্যে ৬২ শতাংশ মনে করেন এ মামলা গণতন্ত্রকে দুর্বল করবে।  অধিকাংশ ডেমোক্রেট মনে করেন গণতন্ত্রকে এ মামলা শক্তিশালী করবে। এদের ৩০ শতাংশ মনে করেন গণতন্ত্রের ওপর এ মামলা কোনো প্রভাবই ফেলবে না।   

জরিপে আরও দেখা গেছে ট্রাম্পের মামলা তদন্তে ম্যানহাটান জেলা অ্যাটর্নি অ্যালভিন ব্র্যাগকে দায়িত্ব দেয়া ঠিক নয় মনে করছেন ৩৮ শতাংশ যখন ৩৫ শতাংশ মনে করছেন ঠিক ব্যক্তির হাতেই তদন্তভার পড়েছে। ২৭ শতাংশ বিষয়টি নিয়ে অনিশ্চিত ধারণা পোষণ করেন। জরিপে কম বেশি ২.৩ শতাংশ ত্রুটি থাকতে পারে বলে বলা হয়েছে।

এনবিএস/ওডে/সি

news