মধ্যপ্রাচ্যের আকাশে এখন যেন যুদ্ধের মেঘ ঘনিয়ে এসেছে। ইসরায়েল ইরানের পরমাণু স্থাপনায় একটি সীমিত কিন্তু বিপজ্জনক সামরিক হামলার পরিকল্পনা করছে বলে খবর বেরিয়েছে। রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগামী গ্রীষ্মের মধ্যে এই হামলা হতে পারে, যদিও যুক্তরাষ্ট্র এতে সমর্থন দিচ্ছে না। এই আলোচনা চলছে এমন এক সময়ে, যখন ইরান ও আমেরিকার মধ্যে কূটনৈতিক আলোচনা শেষ হয়েছে এবং আরেক দফা বৈঠক হতে যাচ্ছে ওমানে।

কিন্তু কেন এই মুহূর্ত এতটা সংবেদনশীল? ইসরায়েলের কৌশলে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। ট্রাম্প প্রশাসন ইতিমধ্যে ইরানের ওপর বড় আকারের বিমান হামলার পরিকল্পনা নাকচ করে দিয়েছিল। এখন ইসরায়েল ছোট ছোট, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে আঘাত করার পথ খুঁজছে—যেখানে আমেরিকার পূর্ণ সামরিক সমর্থনের প্রয়োজন নেই। কিন্তু এই "সীমিত" হামলাও কম বিপজ্জনক নয়। ইরান বারবার সতর্ক করেছে যে কোনো হামলার জবাব তারা কঠোরভাবে দেবে। ইরানের একজন উচ্চপদস্থ নিরাপত্তা কর্মকর্তা দাবি করেছেন, ইসরায়েলি হামলার পরিকল্পনা সম্পর্কে ইতিমধ্যে তাদের গোয়েন্দা তথ্য আছে।

কূটনৈতিক পরিস্থিতিও বেশ টানটান। কিছুদিন আগে রোমে ইরান ও আমেরিকার আলোচনা শেষ হয়েছে, উভয় পক্ষই এটিকে "গঠনমূলক" বলে উল্লেখ করেছে। আগামী ২৬ এপ্রিল ওমানে আরেক দফা বৈঠক হবে। কিন্তু আলোচনা এগোচ্ছে বলে যুদ্ধের আশঙ্কাও কমছে না। ট্রাম্প শান্তিপূর্ণ সমাধান চাইলেও বলপ্রয়োগের অপশন পুরোপুরি উড়িয়ে দেননি। তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, "আমি তাড়াহুড়ো করছি না," কিন্তু তার সরকারের "সর্বোচ্চ চাপ" নীতি—যেখানে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, কূটনৈতিক বিচ্ছিন্নতা এবং এখন ইসরায়েলি হামলার গুঞ্জন—সবই ইরানের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে।

ইসরায়েলের জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ নয়। একটি হামলা ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে পিছিয়ে দিতে পারে, কিন্তু এর জবাবে পুরো অঞ্চলজুড়ে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি আছে। লেবাননের হিজবুল্লাহ, সিরিয়া ও ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলো পাল্টা হামলা চালাতে পারে। এমনকি ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের গতি বাড়িয়ে দিতে পারে। অন্যদিকে, আমেরিকা এখন আরেকটি মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধ এড়াতে চাইছে, বিশেষ করে যখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন মাত্র কয়েক মাস দূরে।

প্রশ্ন হলো—ইসরায়েল কি একা এই হামলা চালাবে? আর এই "সীমিত" হামলা কি সত্যিই সীমিত থাকবে? ইতিহাস বলছে, এ অঞ্চলের যুদ্ধ সহজে নিয়ন্ত্রণে থাকে না। সামান্য искрыও বড় অগ্নিসংযোগ করতে পারে।

একটা বিষয় পরিষ্কার: আগামী কয়েক সপ্তাহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি কূটনীতি ব্যর্থ হয়, যুদ্ধের দামামা আরও জোরে বাজতে শুরু করবে।

#ইসরায়েল_ইরান_সংঘাত #মধ্যপ্রাচ্য_অস্থিরতা #কূটনীতি_নাকি_যুদ্ধ #পরমাণু_ঝুঁকি #আন্তর্জাতিক_সম্পর্ক

news