জাতিসংঘের আদালতে গাজায় গণহত্যা মামলার শুনানি শুরু

গাজা উপত্যকায় গণহত্যার অভিযোগে জাতিসংঘের আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যে মামলা করা হয়েছিল, তার শুনানি শুরু হচ্ছে বৃহস্পতিবার (১১ অক্টোবর) থেকে। নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে অবস্থিত জাতিসংঘের এই অঙ্গপ্রতিষ্ঠানটি বিশ্ব আদালত নামেও পরিচিত। 

মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ইসরায়েলের প্রস্তুতির কাজ প্রায় শেষ এবং বৃহস্পতিবারের শুনানিতে ইহুদি দেশটির প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলি সরকারের অন্যতম মুখপাত্র ইলন লেভি।

বুধবার রাজধানী জেরুজালেমে এক সংবাদ সম্মেলনে লেভি অভিযোগ করেন, হামাসের ‘ধর্ষকদের’ রক্ষা করতে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় গণহত্যার যে অযৌক্তিক অভিযোগ দক্ষিণ কোরিয়া এনেছে, তা মোকাবিলা করতে  বৃহস্পতিবার আদালতে ইসরায়েলের প্রতিনিধিদল উপস্থিত থাকবে।’ ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নৃশংস হামলা ও বেপরোয়া হত্যাকান্ডরত ইসরায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ তুলে গত ৩০ ডিসেম্বর বিশ্ব আদালতে মামলাটি দায়ের করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা।

মামলার আবেদনপত্রের সঙ্গে ৮৪ পৃষ্ঠার একটি নথি সংযুক্ত করে দক্ষিণ আফ্রিকা জানায়, গাজায় হামলারত ইসরায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধের পাশাপাশি গণহত্যা এবং এ সম্পর্কিত অপরাধে সংশ্লিষ্টতারও প্রমাণ রয়েছে।

জাতিসংঘের ১৯৪৮ সালের গণহত্যা কনভেনশনকে ভিত্তি করে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে উল্লেখ করে আবেদনে আরও বলা হয়েছিল, ফিলিস্তিনি জাতির একটি উল্লেখযোগ্য অংশকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্য নিয়েই গাজা উপত্যকায় নৃশংস তান্ডব হত্যাকান্ড চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।

গত ৩০ ডিসেম্বর মামলার আবেদন জমা দেওয়ার দিন আইসিজেকে দ্রুত এ বিষয়ে শুনানির অনুরোধ করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই অনুরোধে সাড়া দিয়ে ১১ জানুয়ারি শুনানি শুরুর দিন ধার্য করেন বিশ্ব আদালত।গত তিন মাসের ইসরায়েলি নৃশংস হামলায় কার্যত ধ্বংস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা। ইতোমধ্যে সেখানে নিহতের সংখ্যা ২৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে এবং আহত ছাড়িয়েছে ৬০ হাজার। এছাড়া এখনও নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ৭ হাজার ফিলিস্তিনি।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, হামাসকে সম্পূর্ণ নির্মূলের আগ পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান চলবে। এদিকে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে যে, গাজা উপত্যকা দখল এবং সেখানকার ফিলিস্তিনি অধিবাসীদের উচ্ছেদ করতেই এ হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। 

এই অভিযোগকে আরও দৃঢ় করেছে নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার কয়েকজন ডানপন্থী সদস্যের মন্তব্য। সম্প্রতি ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোতরিচ এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইতামার বেন গিভির বলেছেন, গাজার ফিলিস্তিনিদের উচিত বসবাসের জন্য কোনো নিরাপদ দেশ বেছে নেওয়া।সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা

এনবিএস/ওডে/সি

news