প্রায় পাঁচ বছর পর পূর্ব লাদাখের নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে সেনা সরানো শুরু করেছে ভারত ও চীন। ডেপসাং ও ডেমচকে সেনা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শেষ করতে সপ্তাহখানেক সময় লাগতে পারে বলে জানা গেছে। 

রাশিয়ার কাজানে ব্রিকস সম্মেলন শুরুর ঠিক আগে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) বরাবর উত্তেজনা প্রশমনে দুই দেশের চুক্তি বা বোঝাপড়া অনুযায়ী এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ভারতের গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, আজ (শুক্রবার) থেকেই মুখোমুখি অবস্থানে থাকা সেনাদের সরানো শুরু হয়েছে। আপাতত দুটি অঞ্চলে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেগুলো হলো ডেপস্যাং ও ডেমচক।

টাইমস অফ ইন্ডিয়ার রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে শুরু হওয়া 'ফেসঅফ'-এর সময়ে যে সব অস্থায়ী তাঁবু বা স্থাপত্য সেখানে ছিল, সেই সব খোলার বা সরানোর কাজ শুরু হয়েছে। ডেপসাং এবং ডেমচকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে এক সপ্তাহের মতো সময় লাগতে পারে বলে জানা গেছে। 

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়াং আজ জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক সমাধান সূত্র মেনে দুই দেশের সেনাবাহিনী প্রাসঙ্গিক কাজ বাস্তবায়ন শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত সেই কাজ সুষ্ঠুভাবেই চলছে।

গত সোমবার ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি প্রথম জানান, পূর্ব লাদাখের বিতর্কিত এলাকার উত্তেজনা প্রশমনে ভারত ও চীনের মধ্যে বোঝাপড়া হয়েছে। সেই বোঝাপড়া অনুযায়ী দুই দেশ এলএসিতে টহলদারি করবে ও নজরদারি রাখাবে। ওই বোঝাপড়া মেনেই পরবর্তী সময়ে সেনা অপসারণের কাজ শুরু হবে এবং ২০২০ সালে এপ্রিল মাসে এলএসিতে সেনানীদের যে অবস্থান ছিল, সেখানে দুই দেশের সেনাবাহিনী ফিরে যাবে।

ওই ঘোষণার পরদিন চীনের পক্ষ থেকেও ওই সমঝোতা–সংক্রান্ত বিবৃতি দেওয়া হয়। তারপরই ভারত জানায়, কাজানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসবেন। পাঁচ বছর পর সেই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। যদিও সেই বৈঠকের পর কোনো যৌথ বিবৃতি প্রচার করা হয়নি। দুই দেশের বিবৃতিতে যথেষ্ট ফারাকও দেখা যায়। ভারতের বিবৃতিতে যাকে ‘চুক্তি’ বলা হয়েছে, চীনের বিবৃতিতে তা ‘গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি’। সেই ‘চুক্তি’ অথবা ‘গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি’ কোন কোন ক্ষেত্রে, তার চরিত্রই–বা কী, দুই দেশের কেউই শুক্রবার পর্যন্ত তা স্পষ্ট করেনি।

সম্প্রতি ভারতীয় সেনা প্রধান জেনারেল দ্বিবেদী বলেন, 'চিনের সাথে ফের বিশ্বাস স্থাপনের চেষ্টা করছে ভারতীয় সেনা বাহিনী। তারাই নিজেদের আক্রমণাত্মক কার্যকলাপের মাধ্যমে এলএসিকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করেছিল। আমরা ২০২০ সালের এপ্রিলের স্থিতাবস্থায় ফিরে যেতে চাই। এরপরে আমরা ডিসএনগেজমেন্ট, ডি-এসকেলেশন এবং এলএসির স্বাভাবিক ব্যবস্থাপনার দিকে নজর দেব। ২০২০ সালের এপ্রিল মাস থেকে এটাই আমাদের অবস্থান।'

পার্সটুডে

news