যুদ্ধ শুধু সীমান্তে নয়, শুরু হয়েছে মনেও। গাজার যুদ্ধ ঘিরে ইসরায়েলে এখন যেন এক ভেতরের অস্থিরতা। প্রায় ১,০০০ সাবেক ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর সদস্য সম্প্রতি একটি উন্মুক্ত চিঠিতে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। আর এতেই যেন আলোড়ন পড়ে গেছে পুরো সেনাবাহিনীতে। কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে—যেসব রিজার্ভ সেনা এই চিঠিতে সই করবেন, তাদের বরখাস্ত করা হবে।

কিন্তু ব্যাপারটা থেমে যায়নি। বরং এরপর আরও হাজারো সাবেক ও রিজার্ভ সদস্য এগিয়ে এসেছেন এমন প্রতিবাদ জানাতে। তাদের দাবি, এই যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পেছনে আসল উদ্দেশ্য নিরাপত্তা নয়, বরং রাজনৈতিক স্বার্থ। সরকার বন্দিদের ঘরে ফেরাতে ব্যর্থ হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। পুরো ব্যাপারটাই এখন ইসরায়েলি সমাজে গভীর বিভক্তির প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছে, যেটা সরাসরি প্রভাব ফেলছে জাতীয় ঐক্যে।

প্রাক্তন পাইলট গাই পোরান, যিনি এই চিঠি লেখার অন্যতম উদ্যোক্তা, তিনি পরিষ্কারভাবে বলেছেন—যুদ্ধ আবার শুরুর মূল কারণ রাজনৈতিক, নিরাপত্তা নয়। গত ১৮ মার্চ প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু যুদ্ধবিরতির পথ থেকে সরে এসে আবারও হামলা শুরু করেন। তার যুক্তি ছিল—এভাবে হামাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করে বাকি বন্দিদের মুক্ত করা যাবে। কিন্তু সমালোচকরা বলছেন, এতে বরং বন্দিদের জীবন আরও ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে।

এক মাস কেটে গেলেও ৫৯ জন বন্দির একজনও উদ্ধার হয়নি, যাদের মধ্যে মাত্র ২৪ জনের জীবিত থাকার সম্ভাবনা আছে। যারা চিঠিতে সই করেছেন, তারা যদিও সরাসরি সেনা দায়িত্ব না নেওয়ার ঘোষণা দেননি, তবুও তাদের অবস্থান স্পষ্ট। বিশেষ করে তারা নিজেদের পরিচয় দিয়েছেন সাবেক পাইলট হিসেবে—কারণ ইসরায়েলের সমাজে সেনাবাহিনীর, বিশেষ করে যুদ্ধবিমানের পাইলটদের, ব্যাপক সম্মান রয়েছে। তাদের এই পরিচয় ব্যবহার করেই তারা সমাজে প্রভাব ফেলতে চাচ্ছেন।

এই প্রতিবাদের ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছে আরও অনেকের মধ্যে—বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, চিকিৎসক, সাবেক কূটনীতিক, শিক্ষার্থী, এমনকি হাই-টেক পেশাজীবীরাও এখন একাট্টা হয়ে যুদ্ধ বন্ধের দাবি তুলছেন।

যুদ্ধ কবে থামবে, তা জানে না কেউ। কিন্তু স্পষ্ট হচ্ছে একটাই—ইসরায়েলি সমাজের ভেতরেই এখন যুদ্ধ চলছে মন, মত আর মূল্যবোধ নিয়ে। খবর ইউএনবির

#ইসরায়েলগাজাযুদ্ধ #বন্দিমুক্তিরআহ্বান #সামরিকবিভাজন #শান্তিরদাবি #রাজনৈতিকআলাদা মত

news