বর্ণবৈষম্যহীন প্রথম শহর হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলের যাত্রা শুরু
মঙ্গলবার সিটি কাউন্সিলের ভোটে সর্বসম্মতিক্রমে শহরটির কোন মানুষকে তার জাত বা গোত্রের নিরীখে মূল্যায়ন করা যাবে না মর্মে এক রায় ঘোষণা করে অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে।
নারী কাউন্সিলর কেশামা সাওয়ান্ত তার আইনী কপিতে লিখেন, সকল বৈষম্য দূরীকরণে জন্য বর্ণ প্রথার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে সবাইকে একসূত্রে গেথে সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য দেশের মানুষকে কাজ করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সুযোগ সুবিধা লাভের বিষয়টি সহজ করতে অবশ্যই জাত ভেদের বৈষম্য কে নিষিদ্ধ করা অত্যন্ত জরুরী ছিল।
ভারতে তিন হাজার বছর আগে থেকে হিন্দুদেরকে একটি কঠিন শ্রেণী বিন্যাসের দোহাই দিয়ে বিভাজন করা হয়েছিল। পাসকৃত অধ্যাদেশে উল্লেখ করা হয় শুধু নাগরিক সমাজ বা শহর নয় এই বৈষম্য এখন থেকে দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও চলবেনা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ ধরনের বর্ণ বৈষম্য প্রকট আকার ধারণ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে।
সিয়াটলের প্রথম ভারতীয় এই নারী কাউন্সিলর বলেন, এরকম বৈষম্যের বেশিরভাগ শিকার হয়ে থাকেন দক্ষিণ এশিয়ান মার্কিনী অভিবাসীরা। এমনকি প্রযুক্তি ক্ষেত্রসহ অন্যান্য কর্মক্ষেত্রেও অভিবাসী নাগরিকরা দেশটির সিয়াটলও অন্যান্য অঞ্চলে এই বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।
তিনি এর আগেও হিন্দু সম্প্রদায়ের ব্রাহ্মণ জাতটি বিলুপ্ত করে সবাইকে এক কাতারে আনার চেষ্টা করেন। যদিও তার এই উদ্যোগের বিরোধিতা করে মার্কিন হিন্দুরা বলেন দেশটির আইনে আগে থেকেই বৈষম্যপ্রথা না থাকায় নতুন করে এটির দরকার নেই।
এসময় ওয়াশিংটন ডিসি ভিত্তিক মার্কিন হিন্দু ফেডারেশন এক খোলা চিঠিতে লিখেন, অধ্যাদেশটির লক্ষ্য প্রশংসার যোগ্য। কিন্ত দেশটির মাত্র ২ শতাংশ জনগণ হিন্দু ধর্মাবলম্বী তাই একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে পুরো সম্প্রদায়ের উপর দোষ চাপানো অন্যায়। খুব কমই দেখা যায় এ ধরণের বৈষম্য আমাদের মধ্যে।
১৯৪৮ সালে ভারতবর্ষে বর্ণ বৈষম্য রহিত করা হলেও দলিত সম্প্রদায়কে এখনও নীচুতার চোখে দেখা হয়ে থাকে। একসময় এ সম্প্রদায়ের মানুষকে স্পর্শ করলে জাত নষ্ট হবে বলে ধারণাও প্রচলিত ছিল। বিশেষজ্ঞদের মতে যুক্তরাষ্ট্রই হলো ভারতীয় অভিবাসীদের মধ্যে দ্বিতীয় পছন্দের দেশ।
এনবিএস/ওডে/সি


