নারী হয়ে ফুটবল খেলায় দুই ফুটবলারের উপর হামলা

 খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলায় ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে হওয়া সংঘর্ষে কয়েকজন নারী খেলোয়াড়ের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত একজন খেলোয়াড় এখনো হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এই ঘটনায় চারজনকে অভিযুক্ত করে মামলা হয়েছে, একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

হামলার শিকার সাদিয়া নাসরিন নামের একজন ফুটবলার মামলা দায়ের করেছেন। তিনি জানিয়েছেন যাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে, সেই পরিবারের লোকজন এখন ফোন করে তাকে হুমকি দিচ্ছে। সাদিয়া নাসরিন খুলনা বিভাগীয় অনুর্ধ্ব-১৭ নারী ফুটবল দলের একজন সদস্য।

সাদিয়া নাসরিন বলেন, গত বৃহস্পতিবার তিনি যখন ফুটবল খেলছিলেন তখন নুপুর খাতুন নামে এক তরুণী আমার একটি ছবি তোলেন। সেদিন খেলা শেষে বাসায় ফিরে জানতে পারি ঐ তরুণী আমার মা এবং আত্মীয়স্বজনকে মাঠে তোলা তার ছবি পাঠিয়ে পোশাক নিয়ে কটুক্তি করেছে। পরদিন আমি তাদের বাড়িতে যাই এমন করার কারণ জানতে, তার মা আমাকে বলছে যে তুমি হাফপ্যান্ট পরে ফুটবল খেলবা আর আমরা সেটা নিয়ে কিছু বলতে পারবো না! 

এরপর আমি কূটক্তির প্রতিবাদ করায় কথোপকথন এক পর্যায়ে হাতাহাতিতে গড়ায়। এসময় ঐ তরুণী ও তার মা আমাকে মারধর করেন।

তিনি আরো বলেন, আমি বাসায় গিয়ে মাকে সব জানাই। এরপর সন্ধ্যার পর আমার মা, নানি ও বন্ধু মঙ্গলী তাদের (ওই তরুণীর) বাসায় যাই। আমার মা তার বাবাকে জিজ্ঞেস করে যে আমাকে কেন মারধর করা হলো। 

এ সময় কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ঐ তরুণীর মা সাদিয়ার মা’কে আঘাত করেন বলে অভিযোগ সাদিয়ার। সাদিয়ার বন্ধু মঙ্গলী বাগচী বাঁধা দিতে গেলে তাকেও আঘাত করা হয় এবং পরে ঐ তরুণীর বাবা লোহার রড দিয়ে মঙ্গলীর মাথায় আঘাত করেন বলে অভিযোগ করেন। 

ওই রাতে লোহার রড দিয়ে আঘাত করার পর মঙ্গলী অচেতন হয়ে যায় এবং এরপর ওই তরুণীর বাড়ির লোকজন মঙ্গলীকে বাড়ির ভেতর নিয়ে বেঁধে রাখে বলে দাবি করেন সাদিয়া নাসরিন।

এরপর পরিস্থিতি দেখে সাদিয়া ও তার মা ফুটবল ক্লাবের সভাপতিকে ঘটনাটি জানান এবং পরবর্তীতে পুলিশের শরণাপন্ন হন।

বটিয়াঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কমকর্তা মিজানুর রহমান জানিয়েছেন মঙ্গলী এখন আশঙ্কামুক্ত অবস্থায় রয়েছেন।

মঙ্গলী বাগচীর বলেন, ওই দিন কথা কাটাকাটির সময় তারা (অভিযুক্ত তরুণীর পরিবারের সদস্যরা) বারবার বলছিল যে হাফপ্যান্ট পরে ফুটবল খেলিস, লজ্জা-শরম নাই। তাছাড়া তারা আমার ধর্ম তুলেও গালাগাল করে। 

বটিয়াঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শওকত কবির বলেন, ঘটনার পরদিন সাদিয়া নাসরিন ঐ তরুণী, তার মা, বাবা ও ভাইকে আসামি করে বটিয়াঘাটা থানায় মামলা করেছেন। আমরা এ পর্যন্ত একজনকে গ্রেফতার করেছে। অভিযুক্ত বাকি তিন আসামি পলাতক রয়েছে বলে জানান মি. কবির। সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা

এনবিএস/ওডে/সি 

news