নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ইরানের নীতি ও আচরণে পরিবর্তন আনা সম্ভব হয়নি: মার্কিন অর্থমন্ত্রী

মার্কিন অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন স্বীকার করেছেন, তেহরানের বিরুদ্ধে ওয়াশিংটনের নিষেধাজ্ঞার তেমন কোনো প্রভাব ইরানের ওপর পড়েনি এবং যেমনটি আমরা চেয়েছিলাম তেমনটি হয়নি। তিনি বলেন, ওয়াশিংটন ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরো কঠোর করার উপায় খুঁজছে। তিনি এটাও স্বীকার করেন, নিষেধাজ্ঞা চাপানোর মাধ্যমে আমেরিকার ইচ্ছামত ইরানের নীতি ও আচরণে পরিবর্তন আনা সম্ভব হয়নি।

ইরান গত ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে আমেরিকার কঠোর নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর ইরানের বিরুদ্ধে কঠোর ও নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন। তিনি ভেবেছিলেন নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আমেরিকার অযৌক্তিক ও বেআইনি দাবির কাছে মাথা নত করতে ইরানকে বাধ্য করা যাবে কিন্তু ট্রাম্প চরমভাবে ব্যর্থ হন এবং ইরান নতী স্বীকার করেনি।

মার্কিন ডেমোক্রেট দলের সিনেটর ক্রিস মারফিও স্বীকার করেছেন, পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গিয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানের সাথে ভালো কোনো সমঝোতায় পৌঁছতে পারবেন বলে যে দাবি করেছিলেন তা আসলে ভুল ছিল। পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র নীতিতে গত ৫০ বছরের ইতিহাসে ট্রাম্প চরম বোকামির পরিচয় দিয়েছিলেন উল্লেখ করে ডেমোক্রেট দলের সিনেটর ক্রিস মারফি স্বীকার করেছেন, ইরানের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টির কৌশল আমেরিকার জন্য কোনো লাভ হয়নি বরং আমেরিকা  পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় ইরান আগের চেয়ে আরো শক্তিশালী হয়েছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এখনো ইরানের ব্যাপারে ট্রাম্পের ব্যর্থ নীতিই অনুসরণ করে যাচ্ছেন। বাইডেন ক্ষমতায় আসার আগে ইরানের ব্যাপারে ট্রাম্পের কঠোর নীতির সমালোচনা করলেও ক্ষমতায় আসার পর তিনিও শুধু যে ট্রাম্পের নীতি অব্যাহত রেখেছেন তাই নয় একইসাথে নানা অজুহাতে ইরানের বিরুদ্ধে নতুন নতুন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে, বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা এবং অন্যান্য মার্কিন রাজনীতিবিদেরা ইরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টির ব্যর্থতার কথা অকপটে স্বীকার করছেন। তবে, নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখার পাশাপাশি তারা ইরানের ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের জন্যও মায়াকান্না করছে  যা তাদের পরস্পর বিরোধী অবস্থান। এমনকি মহামারি করোনার প্রাদুর্ভাবের সময়ও তারা নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছিল এবং অনেক জরুরি ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী ইরানে প্রবেশ করতে দেয়নি।

জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক অনেক সংস্থা ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়ার আহ্বান জানালেও আমেরিকা তাতে কর্ণপাত করেনি। অথচ মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় বহু দুরারোগ্য ব্যধীর ওষুধ না আসায় বহু মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে। এ থেকে ইরানের জনগণের সাথে মার্কিনীদের শত্রুতার প্রমাণ পাওয়া যায়।
খবর পার্সটুডে /এনবিএস/২০২৩/একে

news