নেতৃত্বহীন নাইজারে অস্থির পরিস্থিতি, দুইপক্ষে সংঘর্ষ

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজারে অশান্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সেনা অভ্যুত্থানের পর দেশটিতে ক্ষমতাসীন দলের সদর দপ্তরে হামলা চালিয়ে সেখানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। মূলত অভ্যুত্থানের সমর্থকরা এই হামলা চালিয়েছে। হামলার সময় দপ্তরটিতে পাথর নিক্ষেপ  এবং গাড়িগুলোতেও আগুন দেওয়া হয়। অভ্যুত্থানের সমর্থকদের অনেকের হাতেই রাশিয়ার পতাকা দেখা গেছে। সূ

প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজোমকে বুধবার রাত থেকেই আটক রাখা হয়েছে। কিন্তু কোথায় তাকে আটক রাখা হয়েছে তা এখনও পরিষ্কার নয়। বুধবার সন্ধ্যায় একদল সামরিক কর্মকর্তা জাতীয় টেলিভিশন কেন্দ্র দখল করে এবং অভ্যুত্থানের ঘোষণা করে। পরে সেনাবাহিনীও এই অভ্যুত্থানের প্রতি তাদের সমর্থন ব্যক্ত করে।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই সেনা অভ্যুত্থানের ব্যাপক নিন্দা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজোমকে এই অঞ্চলে ইসলামি জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্বের প্রধান সহযোগী হিসেবে দেখা হয়। আর তাই বাজোমের মুক্তির আহ্বান জানিয়ে অন্যান্য দেশ এবং জাতিসংঘের সাথে যোগ দিয়েছে রাশিয়াও।

নাইজারে সামরিক ঘাঁটি রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন এক ফোনালাপে বাজুমকে ওয়াশিংটনের ‘অটল সমর্থনের’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস প্রেসিডেন্ট বাজোমের ‘অবিলম্বে এবং নিঃশর্ত’ মুক্তি দাবি করেন।

৬৪ বছর বয়সী মোহাম্মদ বাজোম দুই বছর আগে নাইজারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।  বৃহস্পতিবার সোশ্যাল মিডিয়া টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেছেন, দেশের কষ্টার্জিত গণতান্ত্রিক অর্জনকে রক্ষা করতে হবে।বাজোমের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও সমর্থন লাভের চেষ্টা করছেন এবং সংলাপের আহ্বান জানিয়েছেন। নাইজারের সেনাপ্রধান বলেছেন, তিনি সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে লড়াই এড়াতে অভ্যুত্থানকে সমর্থন করছেন। অবশ্য অভ্যুত্থানকারীরা কোনও নেতা ঘোষণা না করায় নাইজারের দায়িত্বে আসলে কে রয়েছেন তা স্পষ্ট নয়।

খবরে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার রাজধানী নিয়ামে দোকানপাট ও বাজার খুলে দেওয়া হয়। এবং ভোরে ভারী বৃষ্টির কারণে অভ্যুত্থান সমর্থকরা দেরি করে রাস্তায় নেমে আসে। রাস্তায় বাজোমের সমর্থকরাও ছিল। দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ঘও ঘটে। সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছে। এ সময় তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। 

 নাইজারের দুই প্রতিবেশী মালি এবং বুরকিনা ফাসো সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সামরিক অভ্যুত্থান হয়েছে। আর অভ্যুত্থানের পর উভয় দেশেই নতুন সামরিক নেতারা ফ্রান্সের কাছ থেকে দূরে সরে গিয়ে রাশিয়ার কাছাকাছি চলে এসেছেন। মালিতে ভারী অস্ত্রে সজ্জিত রাশিয়ান ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের সদস্যরা জিহাদি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সে দেশের সামরিক সরকারকে সাহায্য করছে। ওয়াগনার গ্রুপের তৎপরতা এবং সাহারা মরুভূমির দক্ষিণে সাহেল অঞ্চলের অস্থিরতা পশ্চিমা বিশ্বের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে রয়েছে।

নাইজারের কিছু সুশীল সমাজ গোষ্ঠী সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ফ্রান্স থেকে সরে রাশিয়ার দিকে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছে। ১৯৬০ সালে ফ্রান্সের কাছ থেকে স্বাধীনতার পর নাইজারে চারটি সামরিক অভ্যুত্থান ঘটেছে। এ ছাড়া আফ্রিকার এই দেশটিতে অভ্যুত্থানের চেষ্টা হয়েছে অসংখ্যবার। সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা

এনবিএস/ওডে/সি

news