হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে নাইজারের সেনা কর্মকর্তাদের হুঁশিয়ারি

নাইজারের সামরিক নেতারা বলেছেন, তাদের দেশের ওপর কোনো ধরনের সশস্ত্র হস্তক্ষেপ মেনে নেবেন না তারা। রোববার (৩০ জুলাই) নাইজেরিয়ায় পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোর নেতাদের জরুরি বৈঠককে সামনে রেখে এমন কথা বলেছেন তারা। নাইজারে সাংবিধানিক শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় দেশটির সেনাবাহিনীকে চাপ দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে এই বৈঠক ডাকা হয়েছে।

গত বুধবার এক সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে নাইজারের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজোমকে। অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী প্রেসিডেনশিয়াল গার্ডের প্রধান আবদোরাহমানে চিয়ানি গত শুক্রবার নিজেকে নাইজারের অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান হিসেবে ঘোষণা করেছেন।

খবরে বলা হয়েছে, অভ্যুত্থানের পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ফ্রান্স নাইজারকে অর্থসহায়তা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। নিরাপত্তা সহযোগিতাও বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রও।

এমন অবস্থায় নাইজারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে পশ্চিম আফ্রিকার নেতারা বৈঠকে বসছেন। ১৫ সদস্যবিশিষ্ট জোট ইকোনমিক কমিউনিটি অব ওয়েস্ট আফ্রিকান স্টেটস (ইসিওডব্লিউএএস) এবং ৮ সদস্যবিশিষ্ট জোট ওয়েস্ট আফ্রিকান ইকোনমিক অ্যান্ড মনিটারি ইউনিয়নের নেতারা জোটগুলোতে নাইজারের সদস্যপদ স্থগিত করতে পারেন। আঞ্চলিক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে দেশটির সম্পর্ক ছিন্ন করা হতে পারে। এ ছাড়া দেশগুলো নাইজারের সঙ্গে সীমান্তগুলো বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে।এ ছাড়া ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাজোমকে আবারও ক্ষমতায় ফেরাতে সামরিক হস্তক্ষেপেরও চিন্তা করা হতে পারে।

নাইজারের পূর্বাঞ্চলীয় প্রতিবেশী দেশ শাদ এ দুই আঞ্চলিক সংস্থার কোনোটিরই সদস্য নয়। এরপরও দেশটিকে ইসিওডব্লিউএএস সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। গত শনিবার শাদের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে দেওয়া বিবৃতিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

ওই সম্মেলনকে সামনে রেখে শনিবার রাতে নাইজারের সামরিক নেতাদের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে একটি বিবৃতি পড়ে শোনানো হয়। জান্তা সরকারের মুখপাত্র কর্নেল আমাদু আবদুর রহমানে বলেন, ‘ইসিওডব্লিউএএস বৈঠকের উদ্দেশ্য হলো নিয়ামিতে অনিবার্য সামরিক হস্তক্ষেপের মধ্য দিয়ে নাইজারের বিরুদ্ধে অভিযানের পরিকল্পনা অনুমোদন করা। আফ্রিকার যেসব দেশ ইসিওডব্লিউএএসের সদস্য নয়, তাদের এবং নির্দিষ্ট কিছু পশ্চিমা দেশেরও সহযোগিতা নেওয়া হবে। ইসিওডব্লিউএএস কিংবা এ ধরনের সংস্থাগুলোকে আবারও মনে করিয়ে দিচ্ছি যে আমরা আমাদের মাতৃভূমির সুরক্ষায় বদ্ধপরিকর।’

পরে আরও একটি বিবৃতি দেয় জান্তা। এতে দেশের জনগণকে রোববার সকাল সাতটা থেকে রাস্তায় জড়ো হয়ে ইসিওডব্লিউএএসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং নতুন সামরিক নেতাদের প্রতি সমর্থন দেখানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার ভোরে বাজুমকে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে বন্দী করা হয়, এর পর থেকে তার আর কোনো খোঁজ জানা যায়নি। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ফ্রান্স এবং অন্যরা বলছেন তারা এখনো বাজুমকেই নাইজারের বৈধ প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকার করে। সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা

এনবিএস/ওডে/সি

 

news