মরক্কোর এটলাস পর্বতমালায় প্রিয়জনের সন্ধান করছেন ভূমিকম্পে জীবিতরা

শামিয়া গ্রামের ৮ সেপ্টেম্বর থেকে নিখোঁজ ছোট একটি মেয়ে সন্ধানে মাটি খুঁড়ছেন তার বাবা 
মরক্কোয় ভূমিকম্পে  সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দুর্গম পার্বত্য অনেক গ্রামে অবশেষে ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রম সবে শুরু হয়েছে।

অন্যান্য গ্রামবাসীর মাটি খুঁড়ার দৃশ্য দেখছিলেন আবদেল আবেদ। এ সময় তাদের কোন একজন ক্লান্ত হয়ে পড়লে তিনি ছুটে যেয়ে তার কাজ করতে শুরু করেন ।  

মরক্কোর মারাকেশ অঞ্চলে ৬.৮ মাত্রা ভূমিকম্প আঘাত হানে ৫ দিন আগে। অথচ আবেদের ৯ বছরের মেয়েটি শায়মার কোন সন্ধান আজও মেলেনি। আবেদের আশা, শায়মা এখনো জীবিত আছে। অনেক উঁচূ এটলাস পর্বতের তনিরতে গ্রামে এখনো রোবটের গতিতে উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন জীবিতরা। 

মঙ্গলবার ধ্বংসস্তুপের নীচ থেকে আবেদের স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আর শনিবার খোদ আবেদকে জীবিত উদ্ধার করা হয় ধ্বংসস্তুপের নীচ থেকে। কাছেই স্পেনের দমকল কর্মীদের একটি দল তাদেরকে সহায়তা করতে এগিয়ে আসে। তাদের সঙ্গে রয়েছে শিকারী কুকুর। এসব কুকুর গন্ধ শুকে জীবিতদের অবস্থান ইঙ্গত করতে পারে।

তনিরতে গ্রামের অধিকাংশ বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। গ্রামটিতে এমন একজনকেও পাওয়া যাবে না যার কেউনা কেউ নিহত হননি। গাধায় চড়ে গলিপথ দিয়ে যাচ্ছিলেন আবদেল আলী(২২)। তিনি বললেন, তাদের বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। তার দাদা ও ফুফু নিহত হয়েছেন।

মরক্কোর বাদশাহ ষষ্ঠ মোহাম্মাদ মঙ্গলবার ভূমিকম্প বিধ্বস্ত অঞ্চল পরিদর্শন করেন। 

যুক্তরাজ্যের উদ্ধারদলের নেতা রাস গর্ডন ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য নির্মিত একটি তাবুর পাশে অপেক্ষা করছিলেন। তিনি বলেন, বড় বড় পাথর পড়ে ও ভূমিধসে রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে গেছে। তাই ঘটনাস্থলে পৌঁছানোটাই কঠিন হয়ে পড়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে চিকিৎসা সহায়তায় ক্লিনিক স্থাপন করা হয়েছে। ডাক্তার ইসমাইল মেস্তেরি(২৬)। তিনি বলেন, তবে তার কাছে চিকিৎসার সরঞ্জাম আছে খুবই কম।

সমালোচকরা বলছেন যে, দারিদ্রতা ও ভূপ্রকৃতির কারণে অ্ঞ্চলটিতে ভূমিকম্পে এতো বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মরক্কো সরকার অবশ্য অঞ্চলটিতে ব্যাপকভিত্তিক পুণনির্মান কার্যক্রম শুরুর প্রতিশ্রুতি প্রদান করেছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, এলাকাটি পুণর্গঠনে অনেক সময় লাগবে। অনেকে এও বলছেন যে, এ ক্ষতি হয়ত স্থায়ী রূপ নিতে পারে।সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা

এনবিএস/ওডে/সি
 

news