ইউক্রেনিয়ানদের অধিকাংশই মনে করেন, ইইউতে যোগদানের চেয়ে ন্যাটোর সদস্যপদ বর্তমানে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কিয়েভ ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সোসিওলজির এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। 

২৯শে সেপ্টেম্বর থেকে ৯ই অক্টোবরের মধ্যে পরিচালিত এই জরিপে দেশটিতে বসবাসরত ১০১০ জন উত্তরদাতার কাছে প্রশ্ন করা হয়, কোন ব্লকে ইউক্রেনের প্রথমে যোগদান করা উচিত, ৫৪% বলেন যে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক ব্লকে সদস্যপদ একটি উচ্চতর অগ্রাধিকার ছিল। মাত্র 24% বলেছেন, তারা প্রথমে ইইউ-এর সদস্যপদ পছন্দ করেন, আর 12% বলেছেন, তারা কোনো বিকল্পই পছন্দ করেন না। আরও 10% বলেছেন, তাঁরা সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। 

একই সঙ্গে ইউক্রেনিয়ানদের মধ্যে যারা বিশ্বাস করে যে তাদের দেশের শেষ পর্যন্ত উভয় ব্লকে যোগ দেওয়া উচিত তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে, ৯২% উত্তরদাতা বলেছেন- তারা ইউক্রেনকে ইইউ-এর অংশ হওয়ার পক্ষে এবং 89% বলেছেন যে তারা ন্যাটোর সদস্যপদ সমর্থন করেন। 

উত্তরদাতারা ইইউতে যোগদান এবং ন্যাটোতে যোগদানের জন্য দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তার পাশাপাশি অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকে প্রধান কারণ হিসাবে উল্লেখ করেছেন। 

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি বলেছেন যে কিয়েভ এই বছর শেষ হওয়ার আগেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদ নিয়ে আলোচনা শুরু করবে বলে আশা করছে। একই সঙ্গে তিনি স্বীকার করেছেন, যতদিন রাশিয়ার সঙ্গে সংঘাতে লিপ্ত থাকবে, ততদিন ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগ দিতে পারবে না। 

ইইউ বারবার ইউক্রেন ও তার জনগণের প্রতি তাদের অব্যাহত সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি উরসুলা ফন ডের লেয়েন সম্প্রতি কিয়েভকে যতক্ষণ প্রয়োজন সহায়তা করার জন্য ব্লকের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন তবে তিনি উল্লেখ করেছেন যে ইইউয়ের সদস্যপদ একটি 'মেরিট-ভিত্তিক' অ্যাকসেস প্রক্রিয়ার উপর ভিত্তি করে গঠিত এবং সদস্য হওয়ার জন্য 'স্পষ্ট নিয়ম' এবং 'মাইলস্টোন অর্জন করতে হবে'। 

চলতি মাসের শুরুতে ইউরোপীয় কমিশনের সাবেক প্রেসিডেন্ট জঁ-ক্লদ ইয়ুঙ্কার বলেছিলেন, ইউক্রেন খুব শিগগিরই ইইউতে যোগ দিতে পারবে না, কারণ এটি 'সমাজের সব স্তরে দুর্নীতিগ্রস্ত'  

ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজিও কিয়েভের ন্যাটো ও ইইউ-র আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি গত মাসে বলেছেন, ইউক্রেনের সদস্যপদ 'শান্তির প্রসার ঘটাবে না' এবং তার বদলে রাশিয়া একে 'উস্কানি' হিসেবেই দেখবে 

মস্কো প্রায়ই ন্যাটোর পূর্বমুখী সম্প্রসারণের বিরোধিতা করে আসছে। গত বছর কিয়েভের বিরুদ্ধে মস্কো যখন সামরিক অভিযান শুরু করে, তার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে ইউক্রেনে সামরিক ব্লকের জড়িত থাকার বিষয়টি উল্লেখ করেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

news