যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভ থেকে গ্রেপ্তার ২ সহস্রাধিক, অধ্যাপকের পাঁজরের ৯টি হাড় ও হাত ভেঙে দিল পুলিশ, যা বললেন পুলিশ
দাঙ্গা দমনে যুক্তরাষ্ট্রের পোর্টল্যান্ড পুলিশ অফিসাররা বৃহস্পতিবার পোর্টল্যান্ড স্টেট ইউনিভার্সিটির লাইব্রেরির বাইরে বিক্ষোভকারীদের সাথে ব্যাপক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পুলিশ শুরু থেকে মারমুখী ছিল, কারণ বিশ^বিদ্যায় কর্তৃপক্ষ ফিলিস্তিনিপন্থী বিক্ষোভকারীদের ক্যাম্পাস থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য কঠোর অবস্থান নেয়।
১৮ এপ্রিল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ২ সহস্রাধিকের বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো জুড়ে ফিলিস্তিনিপন্থী ক্যাম্পাস বিক্ষোভের তরঙ্গে পরিস্থিতি ক্রমশ টালমাটাল হয়ে উঠছে।
বিক্ষোভকারীরা কলেজ ও বিশ^বিদ্যালয়গুলিকে ইসরায়েল এবং গাজার যুদ্ধকে সমর্থনকারী সংস্থাগুলি থেকে বিচ্ছিন্ন করার আহ্বান জানিয়েছে।
ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভ চলাকালে ধারণ করা এক ভিডিওতে দেখা যায়, গত শনিবার ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে স্টিভ তামারি দৃশ্যত বিক্ষোভকারীদের ছবি তোলার বা ভিডিও ধারণের চেষ্টা করছিলেন। এ সময় কয়েকজন পুলিশ সদস্য বেপরোয়াভাবে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যান তাকে। এ সময় তার পাঁজরের ৯টি হাড় ও একটি হাত ভেঙে দিয়েছে পুলিশ। মিজৌরি অঙ্গরাজ্যের সেন্ট লুইসে ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে।
ভিডিওতে আরও দেখা যায়, গ্রেপ্তার হওয়ার সময় অধ্যাপক তামারি মাটিতে পড়ে গেলে পুলিশের এক সদস্য তাকে হাঁটু দিয়ে আঘাত করতে থাকেন। পরে দুই হাত পিছমোড়া করে হাতকড়া পরানো হয়। এরপর কয়েকজন পুলিশ তার নিস্তেজ হয়ে পড়া শরীর টেনেহিঁচড়ে একটি ভ্যানের দিকে নিয়ে যায় ও মাটিতে উপুড় করে ছুড়ে ফেলে।
বিক্ষোভ চলাকালে এই অধ্যাপকের স্ত্রী সান্দ্রা তামারিকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনায় একাডেমিক প্রকাশনা ‘দ্য মিডল ইস্ট রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন প্রজেক্ট’ এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে পুলিশের সহিংসতা দুই সপ্তাহ ধরে উদ্বেগজনক প্রবণতা হয়ে উঠেছে। কিন্তু স্টিভের সঙ্গে যা করা হয়েছে, সেটি চূড়ান্ত পর্যায়ের সহিংস আচরণ; এমনকি তা এ মানও ছাপিয়ে গেছে।’
এদিকে হোয়াইট হাউস থেকে দেওয়া এক টেলিভিশন বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘আমরা একটি কর্তৃত্ববাদী জাতি নই, যেখানে জনগণকে চুপ করিয়ে দিই বা ভিন্নমত দমন করি। তবে আমরা আইনহীন দেশও নই। আমরা একটি সুশীল সমাজ, এবং শৃঙ্খলা অবশ্যই বজায় রাখতে হবে।’
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীদের গণহারে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কোথাও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে।
ইউসিএলএর চ্যান্সেলর জিন ব্লক বলেছেন, প্রায় ৩০০ জন বিক্ষোভকারী স্বেচ্ছায় ক্যাম্পাস থেকে চলে গেছেন। ২০০ জনের বেশি বিক্ষোভকারী পুলিশের আদেশ উপেক্ষা করেছেন। তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
ইউসিএলএ কর্তৃপক্ষ বলেছে, ক্যাম্পাসে জরুরি পরিস্থিতির কারণে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ক্লাস হবে অনলাইনে। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ এলাকা এড়িয়ে চলতে বলেছে কর্তৃপক্ষ।সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা
এনবিএস/ওডে/সি


