রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ পর্যায়ে ধরপাকড় নিয়ে সিএনএননের বিশ্লেষণ
দুই সপ্তাহ আগে আকস্মিক প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই সোইগুকে বরখাস্ত করেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। এরপর দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের কথা বলে একে একে মন্ত্রণালয়ের পাঁচজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধরপাকড়ের এ ঘটনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্তাব্যক্তিদের মধ্যে হতাশার জন্ম দিয়েছে।
ইউক্রেনে প্রায় তিন বছরের যুদ্ধের পর রাশিয়া এখন সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে খারকিভ অভিমুখে যে হামলা শুরু করেছে, তাতেও তারা প্রায় সব ক্ষেত্রে সফল। পূর্ব দিকের দনবাস অঞ্চলেও রুশ বাহিনী জয় পাচ্ছে।
সৈন্য ও অস্ত্র-গোলাবারুদের সংকটে ধুঁকছে ইউক্রেন। এই সংকটের মূলে রয়েছে ইউক্রেনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের সামরিক সহায়তা অনুমোদনের জন্য মার্কিন কংগ্রেসে কয়েক মাস ধরে আটকে থাকা। রাশিয়ার ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে ইউক্রেনের এই সংকটও কাজে লেগেছে। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, যুদ্ধক্ষেত্রে অগ্রগতির পরও কেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রধানকে সরিয়ে দিলেন পুতিন।
বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েকজন বিশ্লেষকের সঙ্গে কথা বলেছে সিএনএন। সেই বিশ্লেষকেরা বলছেন, রাশিয়ার সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারি প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার অন্যতম প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। বিপুল অঙ্কের সামরিক ঠিকাদারি চুক্তির বিষয় প্রকাশ করছে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সম্প্রচারমাধ্যমগুলো। প্রকাশ্যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও তাদের বিলাসবহুল জীবনযাপনের সমালোচনা করছে।
বিশ্লেষকদের একজন সিএনএনকে বলেন, ‘(রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে রদবদল নিয়ে) আমরা যেটা প্রত্যক্ষ করছি, সেটা খুবই জটিল এক খেলা। এ খেলার অনেকগুলো দিক রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে এসব ঘটনার মেয়াদকাল এবং পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে জয়ের লক্ষ্যে পুতিনের আত্ম-অনুসন্ধান।’
ধরপাকড় ও রদবদলের কারণে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই ঝাঁকুনির নেপথ্যে রয়েছেন ইয়েভগেনি প্রিগোশিনও। প্রিগোশিন ছিলেন রাশিয়ার ভাড়াটে সেনা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান । ব্যর্থ বিদ্রোহের পর রহস্যজনক এক বিমান দুর্ঘটনায় নিজের ঘনিষ্ঠ কয়েকজনের সঙ্গে নিহত হন প্রিগোশিন।
মৃত্যুর আগে প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই সোইগু ও রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফ জেনারেল ভ্যালেরি জেরাসিমভের প্রতি নিজের ক্ষোভের কথা জানিয়েছিলেন প্রিগোশিন। কড়া ভাষায় ভর্ৎসনা ও কটাক্ষ করে তাদের সমালোচনা করেছিলেন তিনি। প্রিগোশিনের অভিযোগ ছিল, সোইগু ও জেরাসিমভ একই সঙ্গে যেমন অদক্ষ তেমনি ব্যাপক দুর্নীতিগ্রস্ত। সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা
এনবিএস/ওডে/সি


