‘মস্তিষ্ক সংরক্ষণ’ কি ভবিষ্যতে মৃত মানুষের বেঁচে উঠার পথ প্রশস্ত করবে!

যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে মানুষের বয়স বৃদ্ধির প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ করা যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার অধ্যাপক স্টিফেন কোলস ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে প্যানক্রিয়াটিক ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। 

লস অ্যাঞ্জেলেসের বাসিন্দা হলেও কোলস অ্যারিজোনার স্টকসডেলের একটি বেসরকারি ক্লিনিকের সঙ্গে সম্পর্ক রেখেছিলেন। এর কারণ ছিল, তিনি মারা গেলে যেন সেখানকার চিকিৎসকেরা দ্রুত তার মস্তিষ্ক আলাদা করে ফ্রিজে রাখতে পারেন।

কোলসের মৃত্যুর খবর ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকদের দল তার শয্যাপাশে হাজির হলো। তারা থাম্পার নামের এক যন্ত্রের সাহায্যে কোলসের রক্ত চলাচল সক্রিয় রাখলেন। এ ছাড়া দেহে রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখতে বিশেষ রাসায়নিকের ইনজেকশন দিলেন। এসব করার কারণ, যাতে কোলের মস্তিষ্কে দীর্ঘক্ষণ অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা না দেয় এবং মস্তিষ্কের কোনো ক্ষতি না হয়।

সেখানে মানুষের দেহ ও মস্তিষ্ক তরল নাইট্রোজেনে ফ্রিজিং করে রাখা হয় মাইনাস ১৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা হয়। ভবিষ্যতে যদি কোনো প্রযুক্তি বা কৌশল আবিষ্কৃত হয়, তাহলে মস্তিষ্কগুলো আবার বাঁচিয়ে তোলার লক্ষ্য থেকেই এই আয়োজন।
 
এরপর তার দেহ নেওয়া হলো চূড়ান্ত গন্তব্য অ্যালকোরে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রাচীনতম ক্রায়োনিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান। অ্যালকোরের পেশেন্ট কেয়ার বেতে ‘বিগফুট’ ভ্যাকুয়াম ফ্লাস্কসদৃশ পাত্র রাখা আছে। সেখানে রাখা হয় অ্যালকোরের আগে থেকে গ্রাহক হয়ে থাকা মানুষের দেহ বা মস্তিষ্ক।

কোলস ছিলেন অ্যালকোরের ১৩১তম রোগী। তবে তিনিই একমাত্র রোগী, যিনি সেখানে শুধু মস্তিষ্ক সংরক্ষণের জন্য গ্রাহক হয়েছিলেন। এ পদ্ধতিতে শরীর সংরক্ষণ করে রাখার নাম ক্রায়োপ্রিজারভেশন। আবার একে নিউরোপ্রিজারভেশন বা নিউরোসাসপেনশনও বলা হয়।

ড. কেনডিজোরা বলেন, মানব মস্তিষ্ককে পুনরুজ্জীবিত করার প্রযুক্তি থাকলে একটি বাস্তব বা ভার্চ্যুয়াল শরীরও তৈরি করা সম্ভব। তবে এ ধারণার বাস্তবায়ন এখনো অনেক দূরের পথ। তবে কেনডিজোরা বলেন, অতীতে হৃদ্যন্ত্র প্রতিস্থাপনের বিষয়টিও বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনির বিষয় মনে হতো।

 ক্রায়োনিকের ক্ষেত্রে গবেষকদের আশা, ভবিষ্যতে প্রযুক্তি এমন পর্যায়ে পৌঁছাবে, যখন দীর্ঘায়ু লাভ করা সম্ভব হবে। যাদের দুরারোগ্য ব্যাধি রয়েছে, তারা চাইলে ভবিষ্যতের ওই প্রযুক্তির জন্য মস্তিষ্ক সংরক্ষণ করে রেখে যেতে পারেন। তবে এভাবে শরীর সংরক্ষণ করে রাখার খরচও নেহাত কম নয়। পুরো শরীর সংরক্ষণে ২ লাখ ইউরো আর শুধু মস্তিষ্ক সংরক্ষণে প্রয়োজন ৭৫ হাজার ইউরো। সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা

এনবিএস/ওডে/সি 

news