ইউক্রেন সংকট এবং পশ্চিম এশিয়ায় ইসরাইলি বর্বরতার কারণে আমেরিকার সামনে মহা সুযোগ তৈরি হয়েছে। আমেরিকা এখন পরিস্থিতিকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করছে।
আমেরিকার শক্তি প্রদর্শনের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বিশ্বের নানা সংকট সব সময় এই দেশটির শক্তিকে জোরদার করেছে। 'বাসিরাত' সংবাদ সংস্থার বরাত দিয়ে পার্সটুডে জানিয়েছে, বর্তমানে পশ্চিম এশিয়ায় একটি পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধ প্রত্যক্ষ করছে গোটা বিশ্ব। এ অবস্থায় আমাদের এই আশা করা উচিত হবে না যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ থামানোর চেষ্টা করবে এবং যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠায় আন্তরিকতার প্রমাণ দেবে। বাস্তবে উল্টোটাই ঘটছে। গাজা যুদ্ধ ইস্যুতে আমেরিকা নানাভাবে উসকানি দিচ্ছে। ফিলিস্তিন ও লেবাননে বিপর্যয় ও মানবিক সংকটের নেপথ্যে এমন বিনিয়োগকারীরা রয়েছেন যারা মার্কিন অস্ত্র কোম্পানিগুলোর শেয়ার থেকে বিপুল মুনাফা করছে।
এ অবস্থায় কুইন্সি ইনস্টিটিউট ফর রেসপন্সিবল স্টেট ক্রাফট এক প্রতিবেদনে বলেছে, লেবানন ও গাজায় ইহুদিবাদী ইসরাইলে কারণে সৃষ্ট বিপর্যয়ের ফলে আমেরিকার অস্ত্র কোম্পানিগুলোর এখন রমরমা ব্যবসা হচ্ছে।
লকহিড মার্টিন বিশ্বের শীর্ষ সমরাস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান যা এফ-৩৫ জঙ্গিবিমান নির্মাণ করে যাচ্ছে এবং এই জঙ্গিবিমান গাজা ও লেবাননের জনগণকে হত্যায় ব্যবহার করা হচ্ছে। এক বছরে এই কোম্পানির রেভিনিউ বেড়েছে ৫৪.৮৬ শতাংশ। এটি একটি উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি।
এই প্রতিবেদন অনুযায়ী আমেরিকার অপর অস্ত্র নির্মাণ কোম্পানি রেথিওন ব্যাপক মুনাফা অর্জন করেছে। এই কোম্পানির রেভিনিউও বেড়েছে ব্যাপক মাত্রায়। বেড়েছে শেয়ারের দাম।
লকহিড মার্টিন কোম্পানি (ডান পাশে)
লকহিড মার্টিনের পরে বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে রেথিওন কোম্পানি। এই কোম্পানি ভারী বোমা তৈরিতে কুখ্যাতি অর্জন করেছে। গাজা এবং লেবাননের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলোতে এসব বোমা ব্যবহার করে মানুষ ও ঘরবাড়ি মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
আমেরিকার আরেক কোম্পানি হচ্ছে জেনারেল ডায়নামিকস। এটি বাঙ্কার বাস্টার বোমা তৈরি করে। লেবাননের হিজবুল্লাহ মহাসচিব সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যার জন্য এই বোমা ব্যবহার করা হয়েছে। এই কোম্পানির রেভিনিউ ৩৭ শতাংশ বেড়েছে।
যুদ্ধের শুরুর দিকেই পশ্চিমা ব্যাংকগুলোর বিশেষজ্ঞরা বড় বড় কোম্পানিগুলোকে গাজা এবং লেবাননে ইসরাইলি আগ্রাসনে বিনিয়োগ করতে পরামর্শ দিয়েছিলেন। তারা এই পথে বিপুল মুনাফা অর্জনের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন।
গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের এক বছর পর এখন ঐ বিশেষজ্ঞরা গর্ববোধ করছেন। তারা দেখছেন, নানা ভাবে কোম্পানিগুলো মুনাফা করেছে এবং এই ধারা অব্যাহত থাকবে। এ কারণে মার্কিন সরকার অস্ত্র কোম্পানিগুলোর স্বার্থে যুদ্ধে উসকানি দেওয়া অব্যাহত রাখবে, যুদ্ধবিরতির বিষয়ে কখনোই আন্তরিক হবে না।
পার্সটুডে