নানা অজুহাতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা আরোপের ফলে গোটা বিশ্বের ওপর আধিপত্য বিস্তারের মার্কিন আকাঙ্ক্ষা এখন অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি স্পষ্ট হয়ে গেছে।
বার্তা সংস্থা মেহরের বরাত দিয়ে পার্সটুডের রিপোর্টে বলা হয়েছে, মার্কিন অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়ালোন বলেছেন, ওয়াশিংটন আগামী মাসে এমন কিছু দেশের বিরুদ্ধে ‘নতুন ও কঠিন নিষেধাজ্ঞা’ আরোপ করবে যেসব দেশ তার ভাষায় ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে সামরিক সহযোগিতা করছে।
আমেরিকা এমন সময় ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য রাশিয়া ও তার সহযোগী দেশগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে যখন সে নিজেই গাজা উপত্যকায় ইহুদিবাদী ইসরাইলের ভয়াবহ অপরাধযজ্ঞের প্রধান পৃষ্ঠপোষকে পরিণত হয়েছে। মার্কিন সরকার গত এক বছরে ইহুদিবাদী প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মন্ত্রিসভার উগ্র সদস্যদের বিরুদ্ধে কয়েকবার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার হুমকি দিয়েছে; যে হুমকি কখনও বাস্তবায়িত হয়নি।
এদিকে ইরানের সমরাস্ত্র শিল্পের উন্নয়নে ভূমিকা রাখার দায়ে চীনের ছয়টি কোম্পানির বিরুদ্ধে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে আমেরিকা। এসব কোম্পানির বিরুদ্ধে চীনের সেনাবাহিনীকে আধুনিকায়নের কাজে সহযোগিতা করারও অভিযোগ আনা হয়েছে।
মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, এসব কোম্পানি ইরানের সমরাস্ত্র তৈরি এবং চীনের সেনাবাহিনী অস্ত্র কর্মসূচিতে সহযোগিতা করে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত করেছে। এছাড়া, আমেরিকার শিল্প ও নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় দেশটির রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘন এবং অস্ত্র ও ড্রোন প্রোগ্রাম বিকাশের অজুহাতে পাকিস্তানের ৯টি কোম্পানির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
গত মাসে, ইসলামাবাদের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে বিভিন্ন উপকরণ সরবরাহ করার দায়ে কয়েকটি পাকিস্তানি ও চীনা কোম্পানির বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান ঘোষণা করেছিল: ওয়াশিংটন আন্তর্জাতিক নিরস্ত্রীকরণ ব্যবস্থার প্রতি দ্বৈত নীতি গ্রহণ করেছে যাকে পাকিস্তান পক্ষপাতমূলক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করে।
রাশিয়ার ক্ষতি করার লক্ষ্যে আমেরিকা ও ইউরোপীয় দেশগুলো যখন ইউক্রেনকে ব্যাপকভাবে সমরাস্ত্র প্রদান করছে তখন ওয়াশিংটন ইউক্রেন যুদ্ধ বিষয়ক নিষেধাজ্ঞার আওতায় সংযুক্ত আরব আমিরাতে তিনটি এবং মিশরের একটি কোম্পানিকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে।
যুদ্ধ সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞার বাইরেও আমেরিকা নানা অজুহাতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যাচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে কিউবার বিরুদ্ধে আমেরিকার আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কারণে গত সপ্তাহ থেকে দেশটির বিদ্যুৎ খাত বড় ধরনের সংকটে পড়েছে। কিউবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রডরিক্স বলেছেন, হাভানার বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা না থাকলে তার দেশে কখনও বিদ্যুৎ সংকট থাকত না।