ভারতে আবার ভাষা-বিতর্ক চরমে উঠেছে। কেন্দ্রের নতুন শিক্ষা নীতিতে তিনটি ভাষা শেখার বাধ্যবাধকতা আরোপ করায় এর তীব্র বিরোধিতা করছে তামিলনাড়ু সরকার। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, তারা দুই ভাষার নীতিতেই অটল থাকবে এবং কোনোভাবেই হিন্দিকে বাধ্যতামূলক শেখানোর প্রচেষ্টাকে মেনে নেবে না।
তামিলনাড়ুর শিক্ষামন্ত্রী আনবিল মহেশ বলেছেন, রাজ্যের শিক্ষার্থীরা ইতোমধ্যেই বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেডিক্যালসহ সব ক্ষেত্রে সফল, ফলে তৃতীয় ভাষার প্রয়োজন নেই। তারা কেন্দ্রীয় নির্দেশ মানবে না। অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় **মানব সম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান** দাবি করেছেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হিন্দি চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে না, তারা যেকোনো ভাষা বেছে নিতে পারে। তবে তামিলনাড়ুর নেতাদের মতে, অধিকাংশ স্কুলে তৃতীয় ভাষার বিকল্প হিসেবে শুধুমাত্র হিন্দিই সহজলভ্য, ফলে শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়েই তা গ্রহণ করতে বাধ্য হয়।
তামিলনাড়ু সরকার অভিযোগ করেছে, নতুন শিক্ষা নীতি না মানলে কেন্দ্র থেকে রাজ্যের জন্য বরাদ্দকৃত ২,৪০০ কোটি টাকা আটকে দেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিন এটিকে ‘ভাষাগত ব্ল্যাকমেইল’বলে অভিহিত করেছেন এবং সর্বদলীয় বৈঠকের ডাক দিয়েছেন। বিজেপি জানিয়েছে, তারা এই বৈঠক বয়কট করবে।
তামিলনাড়ুর দীর্ঘদিনের হিন্দি-বিরোধী আন্দোলন
তামিলনাড়ুর হিন্দি-বিরোধী আন্দোলনের শেকড় বহু পুরোনো। ১৯৩৮ সালে মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সিতে হিন্দি শিক্ষার বাধ্যবাধকতার বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন হয়, যা শেষ পর্যন্ত ১৯৪০ সালে বাতিল করা হয়। স্বাধীনতার পরও হিন্দি চাপানোর বিরুদ্ধে ১৯৬৫ সালে** ব্যাপক বিক্ষোভ হয়, যার ফলে রাজ্যে দুই ভাষার নীতি চালু করা হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতীয় সংবিধানে কেন্দ্র ও রাজ্য উভয়কেই শিক্ষানীতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। তবে, ভাষাগত বৈচিত্র্যের প্রতি শ্রদ্ধা না দেখালে এই বিরোধ আরও তীব্র হতে পারে।


