টুইটারে ভিন্নমতাবলম্বীদের অনুসরণের ‘অপরাধ!’ ৩৪ বছরের জেল সৌদি তরুণীকে
সৌদি আরবের (Saudi) এক মহিলাকে ৩৪ বছরের জন্য কারাবাসের নির্দেশ দিল আদালত। তাঁর অপরাধ টুইটারে (Twitter) রাজ পরিবারের সমালোচক বিক্ষুব্ধ তথা ভিন্নমতাবলম্বী ও সমাজকর্মীদের ফলো করা এবং টুইটগুলি রিটুইট করা! স্রেফ এই কারণেই প্রায় সাড়ে তিন দশক তাঁকে গরাদের পিছনে থাকার রায় শুনিয়েছে আদালত।
ওই সৌদি মহিলার নাম সালমা আল-শেহাব। তিনি ব্রিটেনের লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। সেখান থেকে পিএইচডি করছিলেন তিনি। ছুটিতে বাড়ি এসেছিলেন। ভাবতেও পারেননি রাতারাতি এত বড় বিপদের মুখে পড়বেন। সৌদি আরবের বিশেষ সন্ত্রাস দমন আদালত প্রথমে অবশ্য তিন বছরের সাজা শুনিয়ে ছিল সালমাকে। তাঁকে জানানো হয়, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা ‘অপরাধ’। আদালত জানায়, সালমার জন্য জনসাধারণের মধ্যে অস্থিরতার সৃষ্টি হয় এবং নাগরিক ও জাতীয় নিরাপত্তার স্থিতিশীলতা নষ্ট হয়ে যায়।
সোমবার সরকারি আইনজীবী আদালতের কাছে আরজি জানান, সালমার সাজার বিষয়টি পুনর্বিবেচিত হোক। এরপরই আদালত তাঁকে ৩৪ বছরের সাজা শোনায়। পাশাপাশি জানিয়ে দেয়, আরও ৩৪ বছর তাঁর বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার ও বিক্ষুব্ধদের টুইটকে রিটুইট করার ‘অপরাধে’ এমন সাজার ঘটনায় বিস্মিত বিশ্ব। সালমার পরিচিত এক ব্যক্তি জানিয়েছেন, তিনি তাঁর সাজা পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করবেন। এই ‘অন্যায়ে’র বিরুদ্ধে তিনি লড়াই চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন ওই তরুণী।
২০১৮-১৯ সাল থেকে ব্রিটেনে পঠনরত সালমা। তাঁর দুই সন্তান ও স্বামী এই মুহূর্তে সেখানেই রয়েছেন। সালমার পরিকল্পনা ছিল তাঁদেরও দেশে নিয়ে আসার। কিন্তু অচিরেই বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো বিপদ ঘনিয়ে এল তাঁর জীবনে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ইতিমধ্যেই এই ঘটনার কড়া সমালোচনা করেছে। এখন দেখার, শেষ পর্যন্ত চাপ বাড়লে সালমার সাজার বিষয়টি নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা করে কি না সেদেশের আদালত। আপাতত সেই কামনাই করছেন তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।সংবাদ প্রতিদিন/এনবিএস/২০২২/একে