মাত্র ২৫ বছর বয়সে সিংহাসনে বসেছিলেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। তাঁর বাবার মৃত্যুর পর রাজমুকুট তুলে দেওয়া হয়েছিল তাঁর মাথায়। তারপর কেটে গিয়েছে ৭০ বছর। ব্রিটেনের উত্থান-পতনে কয়েকটা যুগ পার করে ফেলেছেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে শেষ হল ৭০ বছরের সেই ইতিহাস। গত বছরের অক্টোবর থেকেই বয়সের ভারে শরীরে নানা সমস্যা বাসা বাঁধে। আর বৃহস্পতিবার সেই লড়াইয়ের ইতি। শেষ হল একটা দীর্ঘ অধ্যায়...! শোকস্তব্ধ গোটা বিশ্ব।

১৯২৬ সালের ২১ এপ্রিল লন্ডনের মে ফেয়ারে জন্ম হয় দ্বিতীয় এলিজাবেথের। তিনিই ছিলেন বাবা-মায়ের প্রথম সন্তান। ১৯২৬ সালে রাজসিংহাসনে বসেন তাঁর বাবা। আর ১৯৫২ সালে বাবার মৃত্যুর পর রানি হন এলিজাবেথ। তিনিই ছিলেন রাজ পরিবারের প্রথম মহিলা যিনি সেনাবাহিনীর সদস্য হয়েছিলেন ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। তাঁর দীর্ঘ রাজত্ব কালে একাধিক সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছিল। কিন্তু অবিচল থেকে ছিলেন।

১৯৪৭ সালের ২০ নভেম্বর আর ব্রিটিশ নৌবাহিনীর লেফট্যানেন্ট প্রিন্স ফিলিপের সঙ্গে বিয়ে হয় এলিজাবেথের। প্রিন্স ফিলিপ ছিলেন গ্রিস ও ডেনমার্কের রাজ পরিবারের সন্তান। পরে তিনি গ্রিক পরিচয় ত্যাগ করে ব্রিটেনের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর চার সন্তান, প্রিন্স চার্লস, প্রিন্সেস অ্যান, প্রিন্স অ্যান্ড্রু ও প্রিন্স এডওয়ার্ড। বর্তমানে তাঁর নাতি-নাতনির সংখ্যা ৮ ও তাঁদের সন্তান-সন্ততি প্রায় ১২ জন। ২০২১ সালের এপ্রিলে ৯৯ বছর বয়সে মৃত্যু হয় প্রিন্স ফিলিপের।

রানির জীবন নিয়ে বরাবরই মানুষের উৎসাহ ছিল বেশি। জনপ্রিয়তাও ছিল নজরকাড়া। রাজ পরিবারের ঐতিহ্য বজায় রাখার পাশাপাশি প্রথম থেকেই সরকারি কাজকর্মে তাঁর উৎসাহ ছিল। তবে সারাজীবনে বিতর্কও তাঁর পিছু ছাড়েনি। তাঁর সন্তান প্রিন্স চার্লস ও পুত্রবধূ প্রিন্সেস ডায়না যখন বিচ্ছেদের কথা ঘোষণা করেছিলেন, তখনও বিতর্কের মুখে পড়েছিলেন রানি। আবার প্রিন্স হ্যারি যখন স্ত্রী মেগানকে নিয়ে রাজ পরিবার ছাড়ার কথা ঘোষণা করেন, সেই বিতর্কেরও সাক্ষী ছিলেন রানি।

প্রিন্সেস এলিজাবেথ হিসাবে, তিনি তার ২১ তম জন্মদিনে প্রথমবারের মতো জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছিলেন। তাঁর ভাষণ কেপ টাউন থেকে রেডিওতে সম্প্রচার হয়েছিল। সেই সময়ে তিনি জানিয়েছিলেন, "আমি ঘোষণা করছি যে আমার জীবন, তা ছোট হোক বা দীর্ঘ, সর্বদা আপনার সেবায় নিবেদিত থাকবে।

news