রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যু: গ্রেট ব্রিটেন থেকে কি আলাদা হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া?

ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুতে গ্রেট ব্রিটেন থেকে পুরোপুরি স্বাধীনতা অর্জনের বিষয়টি অস্ট্রেলিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে আবারো আলোচনা শুরু হয়েছে। গ্রেট ব্রিটেন থেকে একটি স্বাধীন প্রজাতন্ত্র হওয়ার জন্য ১৯৯৯ সালে অস্ট্রেলিয়ায় একটি গণভোট অনুষ্ঠিত হয়েছিল কিন্তু সেই গণভোটে ৫৫ ভাগ মানুষ এর বিরোধিতা করেছিল।

কিন্তু দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর সাথে সাথে অস্ট্রেলিয়ার রাজনীতিবিদরা বিশেষ করে রিপাবলিকানরা আবারও ব্রিটেনের কাছ থেকে অস্ট্রেলিয়ার স্বাধীনতার বিষয়টি তুলে ধরেছে। অস্ট্রেলিয়ার বিশিষ্ট রিপাবলিকান রাজনীতিবিদ এবং গ্রীনস দলের নেতা  অ্যাডাম বান্ট দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর এক ঘোষণায় বলেছেন, "এখন অস্ট্রেলিয়াকে এগিয়ে যেতে হবে।" তিনি জোর দিয়ে বলেন, "আমাদের অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীদের সাথে একটি চুক্তি সম্পাদন করতে হবে এবং আমাদের একটি প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।"

"অস্ট্রেলিয়ান রিপাবলিকান মুভমেন্ট" নামে পরিচিত স্বাধীনতাপন্থী সংগঠনটিও ঘোষণা করেছে যে রানি ১৯৯৯ সালের গণভোটের সময় অস্ট্রেলিয়ার সম্পূর্ণ স্বাধীন দেশ হওয়ার অধিকারকে সমর্থন করেছিলেন এবং সেই সময় তিনি  বলেছিলেন যে "এটা অস্ট্রেলিয়ার জনগণের বিষয় এবং তারা একাই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।" যদিও সেই সময়ে গণভোটে অংশগ্রহণকারী পঞ্চাশ শতাংশেরও বেশি ব্রিটেন থেকে স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিলেন। তবে অস্ট্রেলিয়ান রাজনীতিবিদদের দৃষ্টিকোণ থেকে ইতিহাসে ফিরে আসা এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রকৃতিকে সম্মান করা এই দেশের স্বাধীনতার জন্য একটি অনুপ্রেরণা এবং এ ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে জনগণের বিশ্বাস এবং ভোটের উপরই নির্ভর করতে হবে।

অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল বলেছেন: "এখন সময় এসেছে অস্ট্রেলিয়ায় দেশপ্রেমিক মনোভাব নিয়ে একটি প্রজাতন্ত্রী ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার এবং রাষ্ট্রপতি হওয়া উচিত একজন অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকের।"

অস্ট্রেলিয়ার রিপাবলিকানদের দৃষ্টিকোণ থেকে এ দেশের উপর রাজতন্ত্রের শাসন অস্ট্রেলিয়ার উপর ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের একটি পুরানো অবশেষ এবং এটি তার স্থান, সময় এবং প্রয়োজনীয়তার মূল্যবোধের সম্পূর্ণ বিপরীত। কারণ অস্ট্রেলিয়ার উপর ব্রিটিশ সার্বভৌমত্ব ১৭৮৮ সালের দিকে প্রতিষ্ঠিত হয় যখন ব্রিটিশ নৌবাহিনী সিডনিতে আসে। প্রায় পাঁচ বছর আগে ব্রিটেনের কাছ থেকে অস্ট্রেলিয়ার স্বাধীনতার অনুরোধ শুধুমাত্র অস্ট্রেলিয়ার প্রজাতন্ত্রি ব্যবস্থার সমর্থকদের দ্বারা উত্থাপিত হয় নি বরং অস্ট্রেলিয়ার সাতটি অঞ্চল ও রাজ্যের প্রধানরা ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের শাসন থেকে এই দেশকে প্রত্যাহারের দাবিতে একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করেছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার স্থানীয় রাজনীতিবিদদের একজন মিসেস থর্প এই বিষয়ে বলেছেন: "অস্ট্রেলিয়ার পতাকা এই ভূখণ্ডের উপনিবেশের প্রতিনিধিত্ব করে এবং স্থানীয়দের প্রতিনিধিত্ব করে না তাই অস্ট্রেলিয়ার উপর ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক ব্যবস্থার অবৈধ দখলের অবসান ঘটাতে হবে।
খবর পার্সটুডে/এনবিএস/২০২২/একে

news