২ বছরের শিশুকন্যাকে খুনের অভিযোগ, মহিলার মৃত্যুদণ্ড বুধবার, রেহাই চেয়ে উত্তাল আমেরিকা
তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, ১৫ বছর আগে তাঁর ২ বছরের কন্যা সন্তান মারিয়ার মাথায় আঘাত করে খুন করেছেন তিনি। সাউথ টেক্সাসের এই মহিলার নাম মেলিসা লুসিও (Melissa Lucio)। আদালতের নির্দেশে ২৭ এপ্রিল বুধবার তাঁর শরীরে প্রাণনাশী রাসায়নিক ইনজেক্ট করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে।
কিন্তু তাঁর অব্যবহিত আগে মেলিসার (Melissa Lucio) মৃত্যুদণ্ড মকুবের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে আমেরিকা (US)। তা এতটাই যে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাকটিক সাংসদদের একটা বড় অংশ সমস্বরে রেহাইয়ের জন্য আওয়াজ তুলেছেন। যা কিনা মার্কিন ইতিহাসে বিরল।
মেলিসার পক্ষের আইনজীবী, সমাজকর্মী, সেলিব্রিটি মায় বিপুল সংখ্যক মানুষের দাবি, মেলিসাকে এমন অপরাধে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হচ্ছে, যে অপরাধ তিনি করেননি (Melissa Lucio)। ময়নাতদন্তে দেখা যায়, তাঁর মেয়ে মারিয়ার মাথায় ভোঁতা কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল, বা আঘাত লেগেছিল। কিন্তু মেলিসাকে জেরার সময় এমনভাবে চেপে ধরা হয় যে, তিনি মেয়েকে খুন করার কথা স্বীকার করতে বাধ্য হন।
অথচ গোড়ায় অন্তত একশ বার মেলিসা পুলিশকে জানিয়েছিলেন যে তিনি মারিয়াকে খুন করেননি। ওর মাথায় আঘাত করেননি। মারিয়ার মাথায় আঘাত লেগেছিল সিঁড়ি থেকে গড়িয়ে পড়ে। কিন্তু পুলিশ তা শুনতে চায়নি। আদালতও সে কথা অগ্রাহ্য করেছে।
মেলিসার (Melissa Lucio) পরিবার আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল ছিল না। তাঁদের কোনও বাড়িও ছিল না। বরং অভিযোগ ছিল তিনি ছেলেমেয়েদের ঠিক মতো দেখভাল করতেন না। তাই চাইল্ড প্রোটেকশন সার্ভিসেস এক সময়ে তাঁর অন্য শিশুদের তুলে নিয়ে গিয়েছিল। নিউইয়র্ক টাইমসের রিপোর্টে বলা হয়েছে, মেলিসার আইনজীবী জানিয়েছেন যে ছেলেমেয়েদর অবহেলা বা তাদের উপর অত্যাচার করার কোনও প্রমাণ কিন্তু পাওয়া যায়নি।
আবার স্পেশাল লিটিগেশন অ্যাট দ্য ইনোসেন্ট প্রোজেক্টের ডিরেক্টর ভেনেসা পটকিনের কথায়, “মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর মেডিকেল রিপোর্টের ভিত্তিতে এক নিরীহ মহিলাকে মৃত্যুদণ্ড দিতে চলেছে রাষ্ট্র। এটা ঠিক হচ্ছে না।” মেলিসার প্রাণভিক্ষা চেয়ে ইতিমধ্যে আমেরিকায় ১৬ টি মিছিল হয়েছে। টেক্সাস, হাউস্টন, আটলান্টা, বোস্টন, ক্লিভল্যান্ড, ওয়াশিংটন ডিসি, লস অ্যাঞ্জেলস—কোনও শহরই বাদ যায়নি। প্রতিবাদে আওয়াজ তুলেছেন কিম কার্ডাশিয়ান ওয়েস্ট ও আমান্ডা নক্সের মতো সেলেবরাও।
মেলিসার মৃত্যুদণ্ড মকুবের আর্জি এখন টেক্সাস বোর্ড অব পার্ডনস বিবেচনা করে দেখছে। সংখ্যাগরিষ্ঠের মত নিয়ে সেখানে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তার আগে হাতে সময় রয়েছে মাত্র ২৪ ঘণ্টাখবর দ্য ওয়ালের /এনবিএস/২০২২/একে