ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠনের নেতাদের বৈঠক: প্রতিরোধ অব্যাহত রাখার অঙ্গিকার

ফিলিস্তিনের ইসরাইল বিরোধী প্রতিরোধ সংগঠনগুলোর নেতারা মুসলমানদের প্রথম কেবল আল আকসা মসজিদের মর্যাদা রক্ষার বিষয়ে ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন। বৈঠকে তারা সবাই প্রতিরোধ অব্যাহত রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

বৈঠকে ফিলিস্তিনের নেতারা বহু বিষয়ে অভিন্ন অবস্থান গ্রহণ করেন। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ফিলিস্তিনি জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতি ইরানের সাহায্য সমর্থনের ব্যাপক প্রশংসা করেছেন তারা। কেননা রমজানের শেষ শুক্রবারকে বিশ্ব কুদস দিবস পালনের ডাক দিয়ে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান অসামান্য অবদান রেখেছে। ইরানের এ ঐতিহাসিক পদক্ষেপের ফলে ফিলিস্তিন সমস্যা আবারো বিশ্ববাসীর সামনে আসে এবং এটি পুরুজ্জিবীত হয়। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক সমাজকে ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে উৎসাহিত করেছে। এ কারণে প্রতি বছর বিশ্ব কুদস দিবস পালনের সময় যতই ঘনিয় আসে ততই  ইসরাইলিদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

ফিলিস্তিনের ইসলামি জিহাদ আন্দোলনের মহাসচিব যিয়াদ আল নাখালে ইরানকে সবসময়ই ফিলিস্তিনিদের সহযোগী হিসেবে উল্লেখ করে আরব দেশগুলোর নীতির তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, অন্য আরব দেশগুলো অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিন জাতিকে একা ফেলে রেখে গেছে। এ অবস্থায় আরব দেশগুলো যতই দখলদার ইসরাইলের সাথে আপোষের পথে হাঁটছে ততই ফিলিস্তিনিদের প্রতি ইরানের সমর্থনের গুরুত্ব বাড়ছে।

প্রতিরোধ সংগঠনের নেতাদের বৈঠকে আরেকটি যে গুরুত্বপূর্ণ দিক উঠে এসেছে তা হচ্ছে বায়তুল মোকাদ্দাস কেবল ফিলিস্তিনিদের বিষয় নয় বরং এটি সব মুসলিম দেশের বিষয়। ইরানের সর্বোচ্চ নেতাও বিশ্ব কুদস দিবসে দেয়া তার ভাষণে এ কথা বলেছেন। তিনি বলেন, বায়তুল মোকাদ্দাস কোনো একটি জাতি বা গোষ্ঠীর বিষয় নয় বরং তা গোটা মুসলিম উম্মার সঙ্গে সম্পর্কিত। এ কারণে সব মুসলিম দেশের সরকার ও জাতিগুলোর বায়তুল মোকাদ্দাস রক্ষার বিষয়ে দায় দায়িত্ব রয়েছে।

বৈঠকে তৃতীয় যে বিষয়টি গুরুত্ব পায় তা হচ্ছে ইসরাইল বিরোধী প্রতিরোধ সংগ্রামে ফিলিস্তিনসহ অন্য মুসলিম জাতিগুলোকে হতাশ করার জন্য শত্রুদের নানা ষড়যন্ত্র। এ লক্ষ্যে ইসরাইল কোনো কোনো আরব দেশের সাথে সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এ ব্যাপারে লেবাননের হিজবুল্লাহ মহাসচিব সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ বলেছেন, বায়তুল মোকাদ্দাসকে উদ্ধার করা আমাদের প্রধান টার্গেট এবং এ ক্ষেত্রে যে কোনো বাধাকে আমরা ধ্বংস করে দেব।

প্রতিরোধ সংগঠনের নেতাদের বৈঠকে চতুর্থ যে বিষয়টি গুরুত্ব পায় তা হচ্ছে, এ ব্যাপারে তারা সবাই একমত যে আরব দেশের সরকারগুলো যতই ইসরাইলের সাথে আপোষ  করুক না কেন তাতে ইসরাইল বিরোধী প্রতিরোধ সংগ্রাম দুর্বল হবে না তারা আরো শক্তিশালী হবে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, আরব দেশগুলোর আপোষকামী নীতির কারণে প্রতিরোধ তৎপরতা কেবল ফিলিস্তিনের কয়েকটি এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই বরং তা আরো বহু এলাকায় ছাড়িয়ে পড়েছে। গাজা এলাকা ছাড়াও জর্দান নদীর পশ্চিম তীর ও বায়তুল মোকাদ্দাস এলাকায়ও ইসরাইলিদের সাথে সংঘাত নিয়মিত ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া, হিজবুল্লাহ মহাসচিব নাসরুল্লাহ ও ইয়েমেনের আনসারুল্লাহ আন্দোলনের নেতা আব্দুল মালেক হুথি ইসরাইলকে কঠোরভাবে হুশিয়ার করে দিয়েছেন।খবর পার্সটুডের /এনবিএস/২০২২/একে

news