ইয়েমেনে ডায়ালাইসিস প্রক্রিয়া বন্ধের উপক্রম: হাজার হাজার রোগীর জীবন ঝুঁকির মুখে
ইয়েমেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে নির্দিষ্ট ওষুধ এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সামগ্রীর স্বল্পতার কারণে ডায়ালাইসিস প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে গেলে পাঁচ হাজারেরও বেশি রোগীর জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।
ইয়েমেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আশা প্রকাশ করেছে যে আন্তর্জাতিক সংস্থা ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো কিডনি রোগীদের বিষয়ে তাদের দায়িত্ব পালন করবে এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ ও চিকিৎসা ব্যবস্থা সরবরাহ নিশ্চিত করবে। মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, দেশে বছরে পাঁচ লাখ কিডনি রোগীর ডায়ালাইসিস করা হয়, যার জন্য বাধ্যতামূলক ওষুধ ও যন্ত্রপাতির প্রয়োজন। কিডনি কেন্দ্রে কর্মরত চিকিৎসক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বন্ধ থাকায় রোগীদের সমস্যা আরও বেড়েছে।
এদিকে ইয়েমেনের ন্যাশনাল সালভেশন সরকারের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী আলী হিজাফ বলেছেন, কিডনি রোগীদের ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম শেষ হয়ে আসায় ভয়াবহ বিপর্যয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে এবং পাঁচ হাজার রোগীর জীবন ঝুঁকির মুখে পড়েছে। স্বাস্থ্য-মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আনিসুল আসবাহি বিমান বন্দর ও প্রধান দুটি সড়ক পথ খুলে দেয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যাতে লাখ লাখ মানুষের জীবন বাচাতে খাদ্য ও ওষুধ আসতে পারে। এর আগে ইয়েমেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ওষুধ সংকটের কারণে ৪০ হাজার থ্যালাসামি রোগীর জীবন বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছিল।
এদিকে জ্বালানির অভাবে ইয়েমেনের শরণার্থী শিবিরে ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে। বিদ্যুতেরে অভাবে বহু হাসপাতাল বন্ধ হয়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির মুখে পড়েছে শিশুরা। এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে বহু শিশুর মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, ইয়েমেনের আনসারুল্লাহ আন্দোলনের একজন পদস্থ কর্মকর্তা হিজাম আল-আসাদ বলেছেন, শত্রুরা আমাদের জাতির ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়ে এদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ লুটপাট অব্যাহত রাখতে চায়। তিনি বলেন, যুদ্ধের প্রথম দিন থেকেই শত্রুরা ইয়েমেনের তেলের ভাণ্ডার লুটপাটে নিয়োজিত রয়েছে। হিজাম আল-আসাদ ইয়েমেন থেকে সমস্ত বিদেশী সৈন্য প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন শত্রুদের আলোচনার টেবিলে আসতে হবে, তাদের সৈন্য প্রত্যাহার করতে হবে এবং প্রাকৃতিক সম্পদের লুটপাট বন্ধ করতে হবে। হিজাম আল-আসাদ স্পষ্ট করে বলেছেন যে শত্রুরা ইয়েমেনের প্রাকৃতিক সম্পদ লুটপাট বন্ধ না করলে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে। তিনি বলেন, অতীতেও ইয়েমেনের তেল সম্পদ লুট করা হয়েছে এবং এর অর্থ দুর্নীতিবাজ শাসক ও সৌদি আরবের জাতীয় ব্যাংকগুলোতে যাচ্ছে। আনসারুল্লাহর এই কর্মকর্তা স্পষ্ট করে বলেছেন, আমাদের কাছে শত্রুদের আক্রমণ করার অনেক বিকল্প রয়েছে এবং আমরা ইয়েমেনের প্রাকৃতিক সম্পদ লুটপাট এবং তেল চুরি সহ্য করব না।
এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ইয়েমেনে সীমাহীন যুদ্ধাপরাধে লিপ্ত। যেহেতু ইয়েমেনিরা ইসলামের ভিন্ন মাজহাবের অনুসারী সে কারণে নিষেধাজ্ঞা ও যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়ে সৌদিরা সেখানে ভয়াবহ গণহত্যায় মেতে রয়েছে।
খবর পার্সটুডে/এনবিএস/২০২৩/একে