পশ্চিমবাংলায় বাড়ছে অ্যাডিনো ভাইরাস সংক্রমণ, মৃত্যুও হচ্ছে শিশুদের

পশ্চিমবাংলায় হু হু করে বেড়েই চলেছে অ্যাডিনো ভাইরাসের সংক্রমণ। এতে শিশুদেরও মৃত্যু হচ্ছে। দুবাই ফেরত আরও একজনকে বেলেঘাটা আইডিতে আনা হচ্ছে বলে খবর মিলেছে। ফ্রান্স, সুইডেন, চিন, দুবাই ফেরত ৬ জনকে ঘিরে ওমিক্রন সন্দেহ বাড়ছে রাজ্যে।

চিকিৎসকদের দাবি, গত দেড় মাসে শিশুদের মধ্যে সর্দি, কাশি, জ্বর বেড়েছে। তা থেকেই ফুসফুসে সংক্রমণ বাড়ছে। কোভিড পরবর্তী পরিস্থিতিতে শিশুদের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ায় এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। জ্বর-সর্দি-কাশি নিয়ে ভর্তি থাকা শিশুদের মধ্যে শতকরা ৯০ জনেরই শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণ (রেসপিরেটরি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন) দেখা যাচ্ছে। যাদের অধিকাংশই ভাইরাল নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। তাদের মধ্যে বেশির ভাগ আবার অ্যাডেনো ভাইরাসের শিকার।

কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ঘাটতি। কোভিডের কারণে ঘরবন্দি শিশুরা দীর্ঘ সময়ে মেলামেশা থেকে বিচ্ছিন্ন থেকেছে। ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমেছে তাদের। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শিশুরোগের সাধারণ ওয়ার্ডে জায়গা নেই। রোগীর ভিড় বি সি রায় শিশু হাসপাতালেও। কোনও জেলা হাসপাতালে এক শয্যায় দু’-তিন জনকে রাখতে হচ্ছে বলেও খবর। বাদ যাচ্ছেন না বয়স্করাও। জ্বর ও দীর্ঘ দিন ধরে কাশিতে ভুগছেন বহু মানুষ। বৃহস্পতিবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কলকাতায় ওমিক্রন সংক্রমণ চিহ্নিত করে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জ়োন তৈরি করা হবে।

ওমিক্রন আক্রান্ত হয়েছেন বা আক্রান্তের সংস্পর্শে এসেছেন, এমন কেউ থাকলে সেই এলাকাকে মাইক্রো কন্টেনমেন্ট জোন হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কনট্যাক্ট ট্রেসিং বা সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে জোর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। ওমিক্রন সন্দেহভাজনেরা ফোন না ধরলে প্রয়োজনে বাড়ি যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সন্দেহভাজন ব্যক্তি হোম আইসোলেশন ঠিকভাবে মানছেন কি না তা নিশ্চিত করার কথাও বলা হয়েছে। প্রয়োজনে জিও ট্যাগিংয়ের সাহায্য নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য ভবনের কর্তারা।

দৈনিক সংক্রমণ ছাড়িয়েছে ২০০০। বৃহস্পতিবারের বুলেটিন অনুযায়ী, এ রাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ২ হাজার ১২৮ জন। এর মধ্যে কলকাতায় সংক্রমিত ১ হাজার ৯০ জন। মৃতের সংখ্যাও বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১২ জন করোনার বলি হয়েছেন। এর মধ্যে কলকাতায় মৃত্যু হয়েছে চারজনের। এহেন পরিস্থিতি গাইডলাইন জারি করল রাজ্যে স্বাস্থ্য দফতর।

৩ থেকে ৫ দিন টানা জ্বর থাকলে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে শিশুদের। রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা ৯২ শতাংশের কম থাকলে ভর্তি করতে হবে হাসপাতালে। শিশুরা অসুস্থ হলে স্কুলে পাঠিয়ে পঠন বন্ধ রাখার পরামর্শ। ভিড় এড়ানোর পরামর্শ।মাস্ক ব্যবহারে জোর দেওয়া হয়েছে।

 এনবিএস/ওডে/সি

news