ইউক্রেনে চীনের শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে শি’র সাথে আলোচনা করতে চান জেলেনস্কি

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, বেইজিংয়ের শান্তি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করতে তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এর সাথে বৈঠক করতে চান। ইউক্রেনে রাশিয়ার সর্বাত্মক হামলাপ প্রথম বার্ষিকীতে বক্তৃতাকালে জেলেনস্কি বলেন, চীনের প্রস্তাব থেকে আভাস পাওয়া গেছে যে, দেশটি শান্তি স্থাপনের উপায় নিয়ে অনুসন্ধান করছে।

জেলেনস্কি বলেন, আমি সত্যি একথা বিশ্বাস করি যে, চীন রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহ করবে না। চীনের পরিকল্পনায় শান্তি আলোচনা ও জাতীয় স্বার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের আহ্বান জানানো হয়েছে। ১২ দফা পরিকল্পনার দলিলে অবশ্য সুস্পষ্টভাবে রাশিয়ার সেনাদের অবশ্যই ইউক্রেন থেকে প্রত্যাহার করার কথা বলা হয়নি। একই সাথে এতে একতরফা অবরোধ প্রয়োগের জন্য পাশ্চাত্যের নিন্দাও করা হয়েছে। একে ইউক্রেনের পাশ্চাত্য মিত্রদের প্রতি প্রচ্ছন্ন সমালোচনা হিসেবে মনে করা হচ্ছে। চীনা কর্তৃপক্ষ এখনো শি জিনপিং এর সাথে বৈঠকে বসার জেলেনস্কির প্রস্তাবের ব্যাপারে প্রকাশ্যে কোন প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

এদিকে রাশিয়া চীনের শান্তি প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে। মস্কোয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা বেইজিং এর সাথে অভিন্ন মত পোষন করছি।

চলতি সপ্তাহের প্রথম দিকে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী এন্টোনি ব্লিনকেন বলেন, বেইজিং রাশিয়াকে অস্ত্র ও গোলাবারূদ সরবরাহ করার কথা ভাবছে। চীন জোরালো ভাষায় তার এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, চীন সরকার রাশিয়াকে ড্রোন ও কামানের গোলা সরবরাহ করার কথা ভাবছে।

চীনা পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবিসি টেলিভিশনকে শুক্রবার বলেন, পুতিন এর প্রশংসা করেছেন, তাই এটি কেমন করে ভাল কিছু হতে পারে? তিনি বলেন, আমি এ পরিকল্পনায় তেমন কিছুই দেখতে পাইনি যা রাশিয়া ছাড়া অন্য কারোর জন্য কোন উপকার হতে পারে।

বিবিসির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক জন সিস্পসন বলেন, এর মাধ্যমে দৃশ্যত চীন পরিকল্পনা রাশিয়ার পক্ষাবলম্বন করে এমন একটি সমাধানের মুখরক্ষার চেষ্টা করা হয়েছে যাতে একটি শান্তিচুক্তির ব্যবস্থা করে প্রেসিডেন্ট পুতিনকে উদ্ধার করার পথ তৈরির চেষ্টা করা হয়েছে।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বুধবার মস্কো সফর করেন। এসময় তিনি প্রেসিডেন্ট পুতিন ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভের সাথে বৈঠক করেন। তাদের সাথে আলোচনার  পরেই চীনের ১২ দফা শান্তি প্রস্তাব উত্থাপন করা হলো।

পশ্চিমা কর্মকর্তারা চীনা প্রস্তাবের শীতল প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।ন্যাটো প্রধান জেন্স স্টলটেনবার্গ বলেছেন, বেইজিং তেমন কৃতিত্বের পরিচয় দিতে পারেনি কারণ দেশটি ইউক্রেনে অবৈধ হামলাকে নিন্দা  জানাতে সক্ষম হয়নি। ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে সর্বাত্মক হামলা শুরু করে।

এনবিএস/ওডে/সি

news