ব্রেন খুবলে খেয়েছে অ্যামিবা, মস্তিষ্কের স্নায়ু ছিঁড়ে মৃত্যু যুবকের
 আবারও মগজখেকো অ্যামিবাদের প্রকোপ বাড়ছে। ফ্লোরিডার শার্লট কাউন্টিতে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে অ্যামিবার কারণে। চিকিৎসকরা বলছেন, ব্রেন-ইটিং অ্যামিবা ( brain-eating amoeba) ছড়াচ্ছে ফ্লোরিডায়। নাক বা মুখ দিয়ে ঢুকে সটান মস্তিষ্কে গিয়ে আক্রমণ করছে। ব্রেন খুবলে খেয়ে নিচ্ছে, ছিঁড়ে দিচ্ছে ব্রেনের নার্ভ। 
দক্ষিণ-পশ্চিম ফ্লোরিডায় আগেও অ্য়ামিবার সংক্রমণে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল। শার্লট কাউন্টির স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর নাম নাইগ্লেরিয়া ফোলেরি (Naegleria fowleri)। অ্যামিবা হল এককোষী প্রাণী। খালি চোখে দেখা যায় না এই প্রাণীকে। 

বিশেষজ্ঞরা বলেন, অ্যামিবা হল থার্মোফিলিক, উষ্ণ প্রস্রবণ বা গরম জলে এই প্রাণীকে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। সাধারণত পরিষ্কার জলেই অ্যামিবার বাস। জলের উষ্ণতা যত বাড়বে অ্যামিবার সংখ্যাও ততই বৃদ্ধি পাবে। নদী, পুকুর হ্রদ থেকে সুইমিং পুল, যে কোনও জলেই এদের অবাধ বাস। উষ্ণ জল হলে তো কথাই নেই। দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে অ্যামিবারা। ১১৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট  (৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস) তাপমাত্রায় ভাল থাকে এই অ্যামিবারা। সে জন্য হট ওয়াটার লেক বা উষ্ণ প্রস্রবণগুলিতে এদের দেখা মেলে অনেক বেশি।  শিল্পাঞ্চলের কাছাকাছি এলাকায়, দূষিত জলেও দেখা মেলে এদের। দীর্ঘদিন ধরে পরিষ্কার না করা সুইমিং পুল বা ক্লোরিনেটেড নয় এমন বদ্ধ জলে দ্রুত ছড়ায় অ্যামিবা।

চিকিৎসকরা বলছেন, মনে করা হচ্ছে কলের জল থেকে অ্যামিবা (brain-eating amoeba) ঢুকেছিল ওই যুবকের শরীরে। জ্বর, প্রচণ্ড মাথা যন্ত্রণা, বমিভাব ছিল যুবকের। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরে পরীক্ষা করে দেখা যায়, ব্রেনের ভেতরে ছড়িয়ে পড়েছে অ্যামিবা। কোষ বিভাজন ঘটিয়ে সংখ্যায় বেড়ে গেছে। যুবককে আর বাঁচানো যায়নি।
পাঁচ সন্তানকে গলা কেটে খুন, ১৬ বছর পরে একই দিনে স্বেচ্ছামৃত্যু মায়ের
এককোষী হলেও অ্যামিবাদের প্রভাব মারাত্মক। বিশেষ করে ব্রেন-ইটিং অ্যামিবা। মানুষের স্নায়ুকোষকে নিমেষে জখম করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, কোনও ভাবে জলের মাধ্যমে এই প্রাণীকে গিলে ফেললে ততটা ক্ষতি হয় না। তবে কোনও ভাবে নাক দিয়ে যদি শরীরে ঢুকে পড়ে তাহলেই সোজা মস্তিষ্কের কোষে গিয়ে আঘাত করে। এই অ্যামিবার সংক্রমণে যে রোগ হয় তাকে বলে নাইগ্লেরিয়াসিস বা প্রাইমারি অ্যামিবিক মেনিনগোএনসেফেলাইটিস (PAM)। জ্বর, মাথাব্যথা, বমি, পেশির খিঁচুনি দিয়ে উপসর্গ শুরু হয়। দ্রুত অ্যান্টি-ফাঙ্গাল ড্রাগ না দিলে মস্তিষ্কের কোষ ছিঁড়েখুঁড়ে দেয় এই প্রাণীরা।
খবর দ্য ওয়ালের /এনবিএস/২০২৩/একে

news