দীর্ঘ সাত বছর পর উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে ইরান-সৌদি আরব

দীর্ঘ সাত বছর পর মধ্যপ্রাচ্যের দুই আঞ্চলিক প্রতিপক্ষ ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যকার উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বৃহস্পতিবার। আর সেই বৈঠকের আয়োজক ছিল চীন।

২০১৬ সালের পর এই ধরনের বৈঠকে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। সৌদিন আরবের আল এখবারিয়া টিভি চ্যানেলে দেখার গেছে, সেদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফরহাদ আল সাউদ এবং ইরানী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির- আব্দুল্লাহিয়ান চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সামনে পরস্পরের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন।

গত মাসে চীনে দুই দেশের নিম্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বৈঠকে তারা পুনরায় কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে রাজি হয়। সাত বছর আগে ২০১৬ সালের জানুয়ারী মাসে রিয়াদে শিয়া সম্প্রদায়ের এক বিশিষ্ট ব্যক্তিকে মৃত্যুদ্বন্ড দেওয়ার পর তেহরানে সৌদি দূতাবাসের সামনে ইরানীরা বিক্ষোভ করে। তখন সৌদি আরব ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে।

সৌদি আরব সুন্নিভিত্তিক এবং ইরান শিয়াভিত্তিক হওয়ায় মধ্যকার সম্পর্ক আগে থেকেই স্বাভাবিক ছিল না। তাদের মধ্যে খারাপ সম্পর্কের কারণে তার প্রভাব পড়ে পুরো মধ্যপাচ্যে। মধ্যপ্রাচ্যে দেশ লেবানন, সিরিয়া, ইরাক এবং ইয়েমেনের প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপগুলোর প্রতি সমর্থনের বিষয়েও সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে মতপার্থক্য ছিল।    

ইয়েমেনে ২০১৪ সালে সৌদি সমর্থিত সরকারকে যখন শিয়া সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা ক্ষমতাচ্যুত করে, তখন হুতিদের পাশে ছিল ইরান। যদিও পরের বছর সৌদি আরব হুতিদের উপর ব্যাপকভাবে বিমান হামলা চালায়। ইয়েমেনে হুতিদের উথ্বানে সহযোগিতা করার জন্য সৌদি আরব বরাবরই ইরানকে দায়ী করে চলেছে।   

ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্ক পুন:স্থাপনে আগের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলেও গত মাসে তারা নিজ নিজে দেশে দূতাবাস পুন:প্রতিষ্ঠার বিষয়ে ঐক্যমতে পৌঁছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে তেহরান ও রিয়াদে দূতাবাস স্থাপন করা হবে।

ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে পুনরায় কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সতর্কতামূলক অভিনন্দন জানিয়েছে। আর এই দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের বিষয়ে মধ্যস্থতাকারী চীনকে ধন্যবাদ জানিয়েছে জাতিসংঘের সেক্রেটারী জেনারেল অ্যান্টনিও গুটেরেস।

২০১৯ সালে দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক একেবারে বাজে পর্যায়ে চলে যায়, যখন সৌদির প্রধান প্রধান তেল শোধনাগারে ড্রোন ও মিশাইল আক্রমন হয়। তাতে প্রচুর ক্ষয়-ক্ষতি হয় এবং উৎপাদন ব্যবস্থা ব্যহত হয়। সৌদি আরব ও তার মার্কিন মিত্ররা এই ঘটনার জন্য ইরানকে দায়ি করে। যদিও ইরান এইসব ঘটনায় জড়িত থাকার কথা সম্পূর্ণ অস্বীকার করে।    

এনবিএস/ওডে/সি

news