সুদানে সামরিক বাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে সংঘর্ষে নিহত ৫৬, আহত ২০০
শনিবার দেশটির রাজধানী খার্তুমে এই বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা শুরু হয়। এসময় আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড পিড সাপোর্ট ফোর্স (আরএসএফ) প্রেসিডেন্ট ভবন, রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ভবন ও সেনা সদর লক্ষ্য করে হামলা চালায়।
দুই পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময়ের সময়ে জাতিসংঘের তিন কর্মী নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গণমাধ্যমগুলো। সামরিক বাহিনী ও এর প্রতিপক্ষ আরএসএফের মধ্যে দেশটির বিমানবন্দর ও অন্যান্য প্রধান স্থাপনাগুলো দখলে নিতে রাতভর এই সংঘর্ষ চলে। এদিকে দারফুল অঞ্চলসহ দেশের অন্যান্য স্থানেও সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়।
সামরিক ও বিমান বাহিনী জানিয়েছে, আরএসফের ঘাঁটি লক্ষ্য করে তারা বিমান হামলা চালিয়েছে। খার্তুমের বাসিন্দারা এসময় তাদের ভীতির কথা জানিয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, তাদের বাড়ির দরজার সামনেই গুলিগুলো যেন এসে আছড়ে পড়ছে।
সুদান ডক্টরস ইউনিয়ন জানিয়েছে এখনও ঠিক বুঝা যাচ্ছে না ঠিক কতজন বেসামরিক নিহত ও হতাহত হয়েছেন। এদিকে জাতিসংঘের নিহত কর্মীরা বিশ্ব খাদ্য সংস্থা (ডব্লিউ এফ পি)’তে কর্মকরত ছিলেন। তারা দেশতির পশ্চিমে কাবকাবিয়া ঘাটির কাছে খাদ্য সরবরাহের কাজ করছিলেন। দুই পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময়ের সময় তারা নিহত হন। এসময় এরএসএফ সংস্থাটির বেশ কিছু গাড়িও লুট করে। এদিকে বাকি আহত আরো দুইজনের অবস্থা আশকাজনক বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্যকর্মীরা। ২০২১ সালের অক্টোবর থেকেই সুদানে এই ধরণের ক্যু চলে আসছে।
এদিকে আরএসএফ প্রধান মোহামেদ হামদান দাগালো স্কাই নিউজ আরাবিয়ার সঙ্গে এক সাক্ষাতকারে জানান, শনিবার খার্তুমের ৯০ শতাংশ রাষ্ট্রীয় কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো শনিবার তারা দখলে নিয়েছে। তবে সামরিক বাহিনীর এক নেতা জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল- বুরহান এই দাবি নাকচ করে দিয়ে বলেন, এখনও সরকারি সকল স্থাপনার উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে তারা। সিএনএন
অন্যদিক আল-জাজিরার সঙ্গে এক সাক্ষাতকারে আরসএফের দাগালো বলেন, বুরহান একজন অপরাধী। তিনজন বেসামরিক নিহত ও বারোজনেরু বেশি আহত হওয়ার জন্য দাগালোই দায়ি।
খার্তুমের কেন্দ্রীয় হাসপাতাল ফেডেইল কর্তৃপক্ষ সিএনএনকে জানিয়েছে, শনিবার বিকেলে ১২ জনেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক ও সামরিক সদস্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে বলে জানিয়েছে। সামরিক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আরএসএফ খার্তুমের বিমানবন্দরে হামলা চালিয়ে একটি বেসামরিক বিমান জালিয়ে দিয়েছে।
দাগালো সুদানের জানজাউইদের দলনেতা হিসেবে ক্ষমতা লাভ করেন আর এরপর থেকেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসেন। এর আগে ২০১৯ সালের জুলাইয়ে একটি মিছিলে হামলা চালিয়ে ১১৮ জনকে হত্যা করেছিল বলে জানিয়েছে সিএনএন। এছাড়াও ২০০০ সালে সংঘঠিত দারফুর সংঘর্ষের সময়েও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এসেছিল তার বিরুদ্ধে।
এদিকে এএনআই জানিয়েছে, নিহত জাতিসংঘে কর্মিদের নিহতের ঘটনায় সংস্থাটির প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস শোক প্রকাশ করে বলেছেন, দুইপক্ষকেই অনতিবিলম্বে এই সংঘাত বন্ধ করা উচিত। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা নিরসনে উদ্যোগ নিয়ে বেসামরিক নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তায় কাজ করা উচিত তাদের। অন্যদিকে ভারতীয় দূতাবাস তাদের দেশের নাগরিকদেরকে সুদান ভ্রমণে নিষেধ করে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।
এনবিএস/ওডে/সি


