সুদানে সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ২ শতাধিক, আহত ১ হাজার ৮০০
এএফপির বরাত দিয়ে মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ তথ্য জানিয়েছে।
এদিকে সুদানে জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি ভলকার পার্থেস এক অধিবেশনে নিরাপত্তা পরিষদকে বর্তমান পরিস্থিতি খুবই অস্পষ্ট বলে অবহিত করেছেন। পরিস্থিতি ঠিক কোন দিকে ধাবিত যাচ্ছে তা সঠিক করে বলাকঠিন।
এক ভিডিও বার্তায় গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় পার্থেস বলেন, যুদ্ধে জড়িত পক্ষগুলো এমন ধারণা প্রকাশ করছে না যে,তারা এখনই তাদের মধ্যে শান্তির জন্য মধ্যস্থতা চাইছে।
২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বেসামরিক সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে উত্তর আফ্রিকার এই দেশটির সেনাবাহিনী। এরপর থেকে সেনাবাহিনীর জেনারেলরা ‘স্বাধীন কাউন্সিল’-এর নামে দেশ পরিচালনা করছিলেন।
এই স্বাধীন কাউন্সিলের ভাইস-প্রেসিডেন্ট হলেন জেনারেল মোহামেদ হামদান দাগালো। অপরদিকে স্বাধীন কাউন্সিলের প্রধান হলেন জেনারেল আব্দেল ফাতাহ আল-বুরহান।
বেসামরিক সরকার গঠনের অংশ হিসেবে সম্প্রতি আধাসামরিক বাহিনী আরএসএফকে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার উদ্যোগকে কেন্দ্র করেই সেনাবাহিনী এবং আরএসএফের মধ্যে এই দ্বন্দ্ব সৃষ্টি তৈরি হয়েছে।
আর এতে করে চলমান সংঘর্ষে সোমবার (১৭ এপ্রিল) তৃতীয় দিনের মতো আধাসামরিক বাহিনীর একাধিক ঘাঁটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে সেনাবাহিনী।
এদিকে আধাসামরিক বাহিনী আরএসএফকে ‘বিদ্রোহী গোষ্ঠী’ অভিহিত করে এটির বিলুপ্ত ঘোষণা করেছেন সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান। সাবেক এই মিলিশিয়া বাহিনীর সেনাবাহিনীতে একীভূত হওয়ার আলোচনা চলছিল।
চলমান সংঘাতটি মূলত সেনাবাহিনীর প্রধান ও আরএসএফ কমান্ডার ক্ষমতা দখলকে কেন্দ্র করেই। এক সময়ের মিত্র এই দুই জেনারেল এখন উভয়ের অপরের শত্রু।
এর আগে দুই বাহিনীর মধ্যে গত কয়েকদিন ধরেই উত্তেজনা বিরাজ করছিল। পরে শনিবার (১৫ এপ্রিল) তা প্রবল সংঘাতে রুপ নেয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানায়, ওইদিন রাজধানী খার্তুমে বিভিন্ন স্থানে প্রচণ্ড গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের মধ্যদিয়ে সংঘর্ষের শুরু হয়।
রোববার (১৬ এপ্রিল) আরএসএফ দাবি করেছিল, রাজধানী খার্তুম, পার্শ্ববর্তী শহর ওমদুরমান, দারফুরের পশ্চিমাঞ্চলে, সুদানের উত্তরে মেরোওয়ে বিমানবন্দর দখলে নিয়েছে। পরবর্তীতে বিমানবন্দরসহ বেশ কিছু অঞ্চল পুনরুদ্ধার করা হয়েছে বলে পাল্টা বিবৃতিতে দিয়েছিল সেনাবাহিনী।
সোমবার (১৭ এপ্রিল) সুদানের রাজধানী খার্তুমের আবাসিক ভবনগুলোর খুব কাছ দিয়েই উড়তে দেখা যায় সামরিক হেলিকপ্টার। এর আগের দিন রোববার কয়েক দফা চক্কর দিতে দেখা যায় যুদ্ধবিমানকে। আরএসএফের বিভিন্ন অবস্থান লক্ষ্য করে করে হামলা চালায় দেশটির বিমান বাহিনী।
এসময় খার্তুম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আশপাশে ব্যাপক কালো ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়। এছাড়াও শহরের বিভিন্ন স্থানেও তৈরি হয় একই পরিস্থিতি।
এদিকে দেশটিতে নতুন করে অস্থিরতায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে পার্শ্ববর্তীসহ পশ্চিমা দেশগুলো। এমনকি সামরিক বাহিনীকে ব্যারাকে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। জি-৭ দেশগুলোর সঙ্গে বৈঠকের সময় সুদানে যুদ্ধরত পক্ষগুলোকে যুদ্ধবিরতি এবং আলোচনায় ফিরে আসার আহ্বানও জানান তিনি।
এনবিএস/ওডে/সি


