সুদানে নিহত বেড়ে ২৭০, খাদ্য-বিদ্যুৎ সংকটে জনগণ
অবশেষে ২৪ ঘন্টা পর দুই পক্ষই আবারো সংঘর্ষে জড়িয়ে দেশকে আরো সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। দেশটির সামরিক বাহিনী ও আধা সামরিক বাহিনী র্যা্পডি সাপোর্ট ফোর্সের ( আরএসএফ) মধ্যে চলা এই সংঘর্ষে এ পর্যন্ত নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭০ আর আহত হয়েছেন ২ হাজার ৭ শ’র অধিক বলে দেশটির জরুরি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়য়ের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
এদিকে মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) দেশটির টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে দেখা যায় যুদ্ধ বিরতি ঘোষণার পর আবারো রাজধানীতে সংঘর্ষ চলাকালীনের বেশ কিছু দৃশ্য। নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, জাতিসংঘের মূখপাত্র স্টেফানি দুজাররিক এই সংঘাত বন্ধে কোনো আভাস পায়নি বলে মন্তব্য করেছেন।
চার দিন আগে থেকেই বেসামরিক সরকার গঠন ইস্যুকে কেন্দ্র করে দেশটির সামরিক বাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
এদিকে জাতিসংঘ এই যুদ্ধকে মানবিক বিপর্যয় ও স্বাস্থ্যখাতের চরম বাজে পরিস্থিতি বলে অভিহিত করেছে। সংঘর্ষের সময় বিশ্ব খাদ্য সংস্থার তিন কর্মীও নিহত হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অব স্টেট এন্টনি ব্লিনকেন মঙ্গলবার জাপানে অবস্থানের সময় উভয় পক্ষের দুই প্রধান নেতার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। এসময় ব্লিনকেন মানুষ তাদের পরিবারগুলোর সঙ্গে যেন পুনঃমিলিত হতে পারে সেই মানবিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এনে যুদ্ধ বন্ধের আহবান জানান।
পাশাপাশি ত্রাণ বিতরণে সহায়ক পরিবেশ তৈরিতে খেয়াল রেখে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দাবি রাখেন তিনি। সামরিক প্রধান জেনারেল আব্দুল ফাত্তাহ ও আরএসএফ প্রধান হামদান দাগালো এই টেলি আলাপনে অংশ নেন।
সামরিক বাহিনীর মূখপাত্র কর্নেল খালেদ আল আকিদা বলেন, আরএসএফ এমন একটি সশস্ত্র সংগঠন যারা কারো প্রতি সম্মান দেখায় না। তবে আমরা জনসাধারণের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে যে কোনো পদক্ষেপ নিতে আগ্রহী।
লাখ লাখ লোক এসময় তাদের বাড়ি ঘরে লুকিয়ে প্রাণ রক্ষা করার চেষ্টা করেন। গোলার শব্দে মানুষের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে দেশটির রাজধানী খার্তুমসহ আশেপাশের এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ায় পানি ও খাদ্যের তীব্র অভাবে পড়েছে জনগণ।
স্থানীয় এক বাসিন্দা মোহামেদ নামের একজন গণমাধ্যমকে জানান, সংঘাতের ফলে খাদ্য, পানি, বিদ্যুতসহ সকল সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমরা উদ্বিগ্ন। আমর আসলেই হতভম্ব। আমরা কেউ আগে থেকে না আচ করতে পেরে যথাযথ প্রস্ততি নিতেও পারিনি। এবিসি নিউজ
স্থানিয়রা জানান, রাস্তায় নিহতদের মৃতদেহ গুলো পড়ে থাকতে দেখেছেন তারা। মিশর দেশটির সামরিক বাহিনীর পক্ষে থাকলেও অন্যদিকে আরব আমিরাত ও সৌদি আরবে সঙ্গে আরএসএফের রয়েছে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক।
এর আগে জেনারেল দাগালো এক টুইটে বলেন, ব্লিনকেনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার পরে ২৪ ঘন্টার জন্য যুদ্ধ বিরতিতে তিনি রাজি। গত সপ্তাহে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছিল দুই পক্ষ। এদিকে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এই সংঘাতের ফলে। উল্লেখ্য, ২০২১ সালে সুদানে সংগঠিত সামরিক অভূত্থানটি যৌথভাবে পরিচালনা করেছিলেন জেনারেল বুরহান ও জেনারেল দাগালো।
এনবিএস/ওডে/সি


