বিবাহবিচ্ছেদের অধিকার চান ফিলিপাইনের নারীরা
ভ্যাটিকান সিটির বাইরে ফিলিপাইনই একমাত্র জায়গা, যেখানে বিবাহবিচ্ছেদ অবৈধ। বিবাহবিচ্ছেদপন্থী আইনজীবীদের যুক্তি, এই নিষেধাজ্ঞার কারণে দম্পতিদের সম্পর্ক ছিন্ন করা এবং পুনরায় বিয়ে করা কঠিন হয়ে পড়েছে। সহিংস সম্পর্কে বাঁচাও তাদের জন্য অনেক কঠিন।
দেশটিতে এ বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া খুব ধীর ও ব্যয়বহুল। ধারণা করা হচ্ছে, দরিদ্র এই দেশে এমন মামলার জন্য ১০ হাজার মার্কিন ডলারের বেশি ব্যয় হতে পারে। তবে এতেও যে সাফল্য আসবে, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। এ কারণে কিছু মানুষ দ্রুত ফলাফলের জন্য অনলাইন কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ছেন।
তিন সন্তানের মা ফিলিপাইনের স্টেলা সিবোঙ্গা ১১ বছর ধরে বিবাহবিচ্ছেদের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কিন্তু ক্যাথলিক সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের আইনের কারণে তিনি তা পারছেন না। স্টেলার আইনি লড়াইটা শুরু হয় ২০১২ সালে। তখন তিনি স্বামীর বিরুদ্ধে ‘মানসিক অক্ষমতার’ অভিযোগ তুলে বিবাহবিচ্ছেদ চেয়ে আদালতে আবেদন করেন।
৫ বছর ধরে ৩ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার আইনি ফি দেওয়ার পর একজন বিচারক তার পক্ষে রায় দেন। কিন্তু ২০১৯ সালে দেশটির দায়িত্বপ্রাপ্ত সলিসিটর জেনারেলের অফিস এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করে। সেই আপিলের বিচার কাজ এখনো ঝুলে আছে। স্টেলা বলেন, পরে তিনি ওই রায় প্রত্যাহার করার জন্য আপিল আদালতে আবেদন করেন। এখনো এ বিষয়ে তাকে কোন সিদ্ধান্ত জানায়নি আদালত।
ফিলিপাইনে বিবাহবিচ্ছেদের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হলো ক্যাথলিক চার্চ। এই প্রতিষ্ঠান গর্ভপাত ও গর্ভনিরোধকের বিরুদ্ধেও সোচ্চার। চার্চের তীব্র বিরোধিতা সত্ত্বেও ২০১২ সালে একটি বিতর্কিত জন্মনিয়ন্ত্রণ আইন পাস করা হয়। তবে আইনপ্রণেতাদের একটি দল বর্তমানে প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেটে বেশ কয়েকটি বিল উত্থাপন করে বিবাহবিচ্ছেদের বৈধতা দেওয়ার জন্য নতুন করে চাপ সৃষ্টি করে যাচ্ছে।
কংগ্রেসের সদস্য ও একটি বিলের লেখক এডসেল ল্যাগম্যান বলেছেন, আমরা কোনো বিবাহকে ধ্বংস করতে চাই না। তিনি আরও বলেন, অকার্যকর বিবাহ সংস্কার সাধনের বাইরে। এতে বৈধতা দিলে ভুক্তভোগী নারী ও তাদের সন্তানেরা ‘অসহনশীল এবং নিপীড়নকারী স্বামীর’ হাত থেকে রক্ষা পাবে। তবে ‘দ্রুত বিবাহবিচ্ছেদের’ অনুমতি মিলবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা
এনবিএস/ওডে/সি


