হাতে লেখা ৫০০ বছরের পুরোনো কোরআনের কপি পুনরুদ্ধার

 ৫০০ বছরের পুরোনো হাতে লেখা পবিত্র কোরআনের একটি কপির পুনরুদ্ধার কাজ সম্প্রতি শেষ হয়েছে। তাইওয়ানভিত্তিক দাতব্য প্রতিষ্ঠান বুদ্ধিস্ট তজু চি চ্যারিটি ফাউন্ডেশন গত শনিবার এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে।

জানা গেছে, ২০২০ সালে তুরস্কভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী মুসলিম ফয়সাল হু হাতে লেখা ৫০০ পৃষ্ঠার কোরআনের এই পাণ্ডুলিপি বুদ্ধিস্ট তজু চি চ্যারিটি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেং ইয়েনকে উপহার দেন। কোরআনের কপিটি তখন খুবই জীর্ণশীর্ণ ছিল।

কোরআনের এই পাণ্ডুলিপিতে ৭৫টি অধ্যায় রয়েছে। চারজন ভিন্ন ব্যক্তির হাতে এটি লেখা হয়েছিল। বিভিন্ন ধরনের কালি ব্যবহার করে লেখা এ পাণ্ডুলিপিটি ১৫ বা ১৬ শতকের কাছাকাছি সময়ে সম্পন্ন হয়েছিল।

পুনরুদ্ধার কাজ করতে গিয়ে চেং ইয়েন পাণ্ডুলিপিতে ‘সিগারেট বিটল’ নামের এক ধরনের পোকা খুঁজে পান। অনেক দিনের পুরনো বইয়ের ভেতর সাধারণত এ ধরনের পোকা থাকে। তখন তিনি কপিটি পুনরুদ্ধারের জন্য ন্যাশনাল তাইওয়ান লাইব্রেরিকে প্রদান করেন। পরে তাকে এ কাজে সহযোগিতা করেন লাইব্রেরির তৎকালীন ডেপুটি ডিরেক্টর উ ইং মেই ও হু।

হু বলেন, মেরামতের সঠিক উপকরণগুলো পেতে প্রচুর সময় লাগার পাশাপাশি ব্যাপক কষ্ট করতে হয়েছে। এক্ষেত্রে উদাহরণস্বরূপ তিনি পাণ্ডুলিপির পৃষ্ঠাগুলোর উপাদানগুলোর সঙ্গে মেলে এমন লিনেন ফাইবার খুঁজে পাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, এতে আট মাস সময় লেগে গেছে। কারণ সাধারণ সরবরাহকারীদের কাছে এই পণ্যটি খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরে জাতীয় গ্রন্থাগারের গুদামে পাওয়া উপাদান দিয়ে তিনি কাজটি শেষ করেন।

হু আরও বলেন, তিনি অত্যন্ত ধীরে ধীরে পাণ্ডুলিপিটি থেকে পুরোনো ধুলো, বীজ, চুল সরিয়ে নিয়েছিলেন। কাজটি এত ধীরে ধীরে করতে হচ্ছিল যে, দিনে দুই পৃষ্ঠার বেশি কাজ করা যেত না।

পবিত্র কোরআনের কপিটি পুনরুদ্ধারে প্রায় তিন বছর সময় লেগে যায়। করোনা মহামারির কারণে অবশ্য মাঝখানে বেশ কিছুদিন পুনরুদ্ধার কার্যক্রম স্থগিত ছিল। দীর্ঘ তিন বছর পর গত ৫ জুন চেং ইয়েনের কাছে পুনরুদ্ধার করা কাজটি উপস্থাপন করেন লাইব্রেরির পরিচালক সাও সুই ইং এবং তার সহযোগীরা।

ন্যাশনাল তাইওয়ান লাইব্রেরির পরিচালক সাও সুই ইং এ পাণ্ডুলিপি পুনরুদ্ধারের ব্যাপারে বলেন, জাতীয় গ্রন্থাগারের তত্ত্বাবধানে পুনরুদ্ধার করা গ্রন্থগুলোর মধ্যে এটি প্রাচীনতম। পাণ্ডুলিপির পুনরুদ্ধার কাজের জন্য সাও সুইং কোনো আর্থিক বিনিময় গ্রহণ করেননি। বরং তিনি মন্তব্য করেন, এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থের পুনরুদ্ধার কাজ লাইব্রেরির গুরুত্ব বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। এর মাধ্যমে তার গবেষণা দলের পেশাদারিত্ব ও দক্ষতার স্বীকৃতিও প্রমাণিত হবে।সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা

 এনবিএস/ওডে/সি

news