রোহিঙ্গা সহায়তায় জাপান-ইউএনএইচসিআরের ২.৯ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি

 জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরের (ইউনাইটেড ন্যাশনস হাই কমিশনার ফর রেফিউজিস) ঢাকাস্থ কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) এ চুক্তিতে সই করেন ইউএনএইচসিআর বাংলাদেশের প্রতিনিধি ইয়োহানেস ভন ডার ক্লাও এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি। ইউএনএইচসিআরের কার্যালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাপানের এ অনুদানে ইউএনএইচসিআর কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী যেমন পাটি, কম্বল ও সাবান বিতরণ করে যেতে সক্ষম হবে। এছাড়া রোহিঙ্গাদের ঘর এবং বিভিন্ন অবকাঠামো যেমন ড্রেন, সেতু, হাঁটার পথ, সিঁড়ি, পাহাড়ি ঢাল ধরে রাখার দেয়াল মেরামত ও মজবুত করা হবে।

ইয়োহানেস ভন ডার ক্লাও বলেন, এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে জাপানের কাছ থেকে সহায়তাটি এলো, যখন রোহিঙ্গারা তাদের জীবন পুনর্গঠনের চেষ্টা করছে সাম্প্রতিক কিছু অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ও ঘূর্ণিঝড় মোকায় ক্যাম্পের বিভিন্ন অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর। এ অনুদান আমাদের সাহায্য করবে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে ও ভবিষ্যত দুর্যোগের ঝুঁকি থেকে রোহিঙ্গাদের রক্ষা করতে। ক্যাম্পে বিশেষ করে নারী ও শিশুরা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

কক্সবাজারের পাশাপাশি ভাষানচরে জাপানের অনুদানে চলমান কিছু প্রকল্প সহায়তা পাবে, এবং রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা বাড়াতে কিছু কাজ করা হবে, যেমন পরিসেবাগুলোতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রবেশগম্যতা।

জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, জাপান সরকারের সহায়তা রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগণ উভয়ের জীবনমান উন্নয়নে সহায়ক হবে।  তিনি বলেন, আমরা ইউএনএইচসিআরকে ২ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলার দিতে পেরে আনন্দিত। আশা করি, এ সহায়তা আশ্রয় নির্মাণ এবং পুনর্বাসন, এবং সাইট রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নের মাধ্যমে অগ্নিপ্রতিরোধসহ রোহিঙ্গাদের সুরক্ষাকে শক্তিশালী করবে।

জাপান মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে সহায়তাসহ টেকসই সমাধানের লক্ষ্যে কাজ চালিয়ে যাবে এবং রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগণের জীবনযাত্রার উন্নতির জন্য ইউএনএইচসিআরের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে সহযোগিতা করবে।

২০১৭ সালের আগস্টে রোহিঙ্গা সংকট শুরুর সময় থেকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক কার্যক্রমের অটল সমর্থক হিসেবে আছে জাপান। এ নতুন অর্থায়নের মাধ্যমে ইউএনএইচসিআর ও জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থাগুলোর পাশাপাশি বাংলাদেশে কর্মরত এনজিওগুলোকে জাপান এখন পর্যন্ত ২শ’ মিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি অনুদান দিয়েছে।

এ চুক্তির ঘোষণা এল ইউএনএইচসিআরের ডেপুটি হাইকমিশনার কেলি ক্লেমেন্টসের বাংলাদেশ সফরের ঠিক পরপরই। যিনি সফরকালে রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি স্থানীয় জনগণের প্রয়োজনীয় মানবিক ও জীবিকামূলক চাহিদার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। তহবিলের অভাবে রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্যসহ জীবন রক্ষাকারী সরবরাহ কমে গিয়েছে। কক্সবাজারে ও ভাষানচরে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানকারী স্থানীয় বাংলাদেশিসহ প্রায় ১ দশমিক ৫ মিলিয়ন মানুষকে সহায়তার জন্য মানবিক সংস্থাগুলো এবার ৮৭৬ মিলিয়ন ডলারের তহবিলের আবেদন করেছে।  

চলতি বছরের জুন পর্যন্ত, জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যানটি প্রায় ২৮ শতাংশ অর্থায়ন পেয়েছে। একটি বৃহদাকার মানবিক বিপর্যয় এড়াতে স্থিতিশীল ও টেকসই অর্থায়নের প্রয়োজন। সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা


 এনবিএস/ওডে/সি

news