অগ্রাধিকারভিত্তিক’ বিষয়ে কাজ করতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার মঙ্গলবার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বলেছেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য একসঙ্গে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া ও অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু’র গত সপ্তাহের বাংলাদেশ সফরের পর বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্য অর্জনের জন্য নাগরিক সমাজ, মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক ও শ্রম অধিকারকর্মীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। আরও আছে মানবাধিকার লংঘনের জবাবদিহিতার গুরুত্ব। উজরা জেয়ার গত সপ্তাহের বাংলাদেশ সফরে এসবই ছিল জোরালো বিষয়।
একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ম্যাথু মিলার একথা বলেন। তিনি বলেন, এসবই আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। তবে নিষেধাজ্ঞা কাজ করছে- এমন এক প্রশ্ন শুনতে না পাওয়ায়, এর জবাব দেননি ম্যাথিউ মিলার।
একজন সাংবাদিক তার কাছে জানতে চান, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বাংলাদেশ সফর করেছেন। কিন্তু বাংলাদেশে নির্যাতন এবং বিরোধীদের ওপর হামলা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কি? জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, আমি বলবো যে, আন্ডার সেক্রেটারি (উজরা) জেয়া এবং অন্য কর্মকর্তারা বাংলাদেশ সফর করেছেন। তারা গত সপ্তাহের এই সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তিনি শ্রম অধিকারকর্মী, নাগরিক সমাজের নেতা ও মানবাধিকারের কর্মীদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন। এসব মিটিংয়ে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশের যে লক্ষ্য তা অর্জনে একসঙ্গে কাজ করার গুরুত্বে জোর দিয়েছেন আন্ডার সেক্রেটারি। জোর দিয়েছেন নাগরিক সমাজ, মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক, শ্রম অধিকারকর্মী, মানবাধিকার লঙ্ঘনের জবাবদিহিতা এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অব্যাহতভাবে সহযোগিতা দেয়ার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে। এ ছাড়া কক্সবাজারে বাংলাদেশের সিনিয়র কর্মকর্তা ও মানবাধিকার বিষয়ক অংশীদারদের সঙ্গে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন উজরা জেয়া। তিনি এ সময় এই সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে বাড়তি মানবিক সহায়তা হিসেবে ৭ কোটি ৪০ লাখ ডলার দেয়ার ঘোষণা দেন। মিলার আরো বলেন, এই অঞ্চলে মানবপাচার সমস্যা মোকাবিলায় সরকার ও সুশীল সমাজের অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করতে নিবেদিত যুক্তরাষ্ট্র।
ম্যাথু মিলার বলেন, আমি আনন্দিত যে, এই অঞ্চলের সঙ্গে শক্তিশালী যোগাযোগ ও সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি আছে উজরা জেয়ার। আমি শুধু আপনাকে বলতে চাই, সাবেক রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনা বাংলাদেশের ৬৪টি জেলা সফর করেছেন। তার সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয়েছে। বাংলাদেশসহ পররাষ্ট্র বিষয়ক সম্পর্কে তার আছে ৩৮ বছরের বিস্তৃত অভিজ্ঞতা। তিনি আমাকে বলেছেন, বাংলাদেশ ম্যাটারস। বাংলাদেশ হলো বিশাল, অষ্টম বৃহৎ দেশ। এবং এটা বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি তার সময় ব্যয় করেছেন। তিনি ও যুক্তরাষ্ট্র দারিদ্র্য ও মাতৃমৃত্যু হার কমাতে সহায়তা করেছেন। মিলারের কাছে ওই সাংবাদিক জানতে চান, আন্ডার সেক্রেটারি (উজরা জেয়া) ও অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু তাদের সফরের সময় বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় দুটি বড় রাজনৈতিক সমাবেশ প্রত্যক্ষ করেছেন।
এ সময়ে কোনো ইস্যু দেখা যায়নি। তারা বাংলাদেশ ত্যাগ করার পরই ইস্যু সামনে এসেছে। আমরা যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করি। আমার একজন সহকর্মী বলছিলেন, নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে একটি ঘটনা ঘটেছে। সে বিষয়ে আপনি কথা বলেছেন। এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আহ্বান জানিয়েছেন আপনি। ওই সাংবাদিক আরও জানতে চান, বর্তমান পরিস্থিতিকে আপনি কিভাবে মূল্যায়ন করবেন। যুক্তরাষ্ট্রের এই পোডিয়াম থেকে অতি সম্প্রতি আপনারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এরপর যেসব ঘটনা ঘটছে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যকার বর্তমান সম্পর্ককে তার প্রেক্ষিতে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন আপনি?
এ প্রশ্নের জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, আপনি যে পয়েন্ট উল্লেখ করেছেন তার প্রতি সম্মান রেখে প্রথমেই আমি বলবো, বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ। এ বিষয়ে প্রকৃতপক্ষে আমি প্রায়দিনই এই ব্রিফিং রুম থেকে কথা বলি। যুক্তরাষ্ট্রের সিনিয়র কর্মকর্তারা নিয়মিত বাংলাদেশ সফর করছেন। এতেই এই মূল্যায়ন শেয়ার করছি আমরা। উপরে উল্লেখিত বক্তব্য উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, সম্পর্কের বিষয়ে আপনার প্রশ্নের জবাবে বলব- এসব কারণে বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমরা সরাসরি যোগাযোগ রাখছি। আমরা বিশ্বাস করি আমাদের দুই দেশের জন্য এসব বিষয় শেয়ার করা উচিত। তাই আমরা এই পোডিয়াম থেকে কথা বলি।
এরপর ওই সাংবাদিক জানতে চান, আপনি বলেছেন- নিষেধাজ্ঞা ভাল কাজ করছে। আমি শুধু আপনার কাছে দুটি বিষয়ে জানতে চাই। সম্প্রতি কিছু ঘটনা, হামলা, নিয়ম লঙ্ঘনের (ঘটনা ঘটেছে)। (তবে প্রশ্নকর্তার প্রশ্নের এই অংশে কিছু অস্পষ্ট শব্দ ছিল)। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা কাজ করছে, আমি মনে করি। আপনাকে ধন্যবাদ। এর জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, আমি প্রশ্ন শুনতে পাইনি।সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা
এনবিএস/ওডে/সি


