১০ কোটি মানুষ কমলে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে পড়বে চীন: পেটার জেইলহান

ভাষ্যকর জো রোগানের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেছেন প্রখ্যাত ভূরাজনৈতিক বিশ্লেষক পেটার জেইলহান। তার বিশ্বাস, চীনের পতন আসন্ন। সম্ভাব্য এ বিপর্যয় আসতে বাকী আর মাত্র ১০ বছর। 

তার এ জটিল ভবিষ্যতবাণীর পেছনের কারণ হল, চীন তার জনসংখ্যা সম্পর্কে ভুল তথ্য দিচ্ছে। দেশটির সরকারের হিসেবের চেয়ে প্রকৃত জনসংখ্য ১০ কোটি কম।

রোগান যখন প্রশ্ন করেন, ‘আপনি কি বলতে চাচ্ছেন যে, চীনের হাতে আর মাত্র ১০ বছর সময় আছে ?’ জবাবে জেইলহান বলেন, ‘হ্যা তাই।’

অনেকে যুক্তি দেখান যে, চীনের বিশাল সামরিক বাহিনী, জনগণের ওপর নিয়ন্ত্রণ এবং অর্থনৈতিক শক্তি দেশটির যেকোন ধরণের পতন রোধে রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করছে। চীনের অর্থনীতি যে বিভিন্ন ধরণের চাপের মধ্যে রয়েছে তার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। জিরো কভিড পলিসির কারণে গত বছর রাস্তায় গণঅসন্তোষ প্রকাশ পায়। কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যায়। যার ফলশ্রুতিতে শিল্পোৎপাদন হ্রাস পায় এবং ভোক্তাদের ব্যয়ও কমে আসে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও বেশ কমে যায়। যা ছিল গত ৫০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।

চীনের জনসংখ্যা দ্রুত বুড়িয়ে যাচ্ছে। অবসরগ্রহণকারীদের স্থানপুরণের মতো কর্মোপযোগী বয়সের লোকজনের সংখ্যা কমে এসেছে। প্রায় তিন দশক ধরে চলা চীনের এক সন্তান নীতির অবসান ঘটে ২০১৬ সালে। এ নীতি পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় এবং দীর্ঘমেয়াদে অর্থনৈতিক সম্ভাবনার জন্য হুমকি সৃষ্টি করে। চীন এ সংকট উত্তরণে তিন সন্তান গ্রহণের নীতি অবলম্বন করেছে। তবে এর ফল কেমন হবে তা স্পষ্ট নয়।

চীনের রিয়েল স্টেট মার্কেট অনেকদিন ধরে মন্দা চলছে। ২০২২ সালে দেশটিতে বাড়ির দাম বেশ পড়ে যায়। এরমধ্যে ২০১৫ সালে বাড়ির দাম সবচেয়ে বেশি কমে যায়। নির্মান,  ইস্পাত ও সিমেন্টের মতো খাতগুলোর গতিও নিম্নমুখি। এতে বেকারত্ব বাড়ছে ও কমে যাচ্ছে কর্মসংস্থান।

 চীনে গত বছর রপ্তানি আয় পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ৯.৯ শতাংশ হ্রাস পায়। বানিজ্য চীনের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ২০২১ সালে জিডিপির ২০ শতাংশ আসে রপ্তানি থেকে। 

চীন এখন আভ্যন্তরীন চাহিদা বাড়ানোর প্রতি নজর দিচ্ছে। এতে সামনের সারিতে রয়েছে  ইলেক্ট্রনিক কার নির্মাতারা। তবে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের জন্য অর্থনীতির কাঠামো ও নীতির পরিবর্তন করতে হবে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল পূর্বাভাস দিয়েছে যে, এবার চীনের প্রবৃদ্ধি হবে ৫.২ শতাংশ। এর আগে তারা অবশ্য বলেছিল এ প্রবৃদ্ধি হবে ৪.৪ শতাংশ। চীনের অর্থনৈতিক মন্দা ও জনসংখ্যাগত চ্যালেঞ্জের প্রভাব আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পড়তে পারে। চীনা অর্থনীতির মন্দা যুক্তরাষ্ট্রে মুল্যবৃদ্ধি ঘটাতে পারে এবং মার্কিন পণ্যের চাহিদার ওপরও চাপ বাড়তে পারে।সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা

এনবিএস/ওডে/সি

news