বিউটি পার্লার কি ইসলামের শরিয়াবিরোধী?
বিউটি পার্লার বন্ধ ঘোষণার বিরোধিতা করে বুধবার এভাবেই কাবুলের রাস্তায় বিক্ষোভ করে আফগান নারীরা। যাদের বেশির ভাগেই বিউটি পার্লারের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এসময় তালেবান সৈন্যরা টিয়ার গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করে নারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। তাদের ভাষ্য মতে তারা তাদের নিরাপত্তার ব্যপারে শতভাগ উদ্বিগ্ন ছিল এবং তারা এমন একটি দলের মুখোমুখি ছিল যারা আপনি একজন পুরুষ বা মহিলা যুবক বা বৃদ্ধ কিনা তা চিন্তা করেনা তারা কেবল মানুষকে আঘাত করবে।
এটা গতকালও ঘটেছে। তারা আমাদের মারধোর করেছে ধাওয়া করেছে এবং পানি ছুঁড়েছে। তালিবানের আদেশে আগামী সোমবার থেকে আফগানিস্থানের সব বিউটি পার্লার বন্ধ হয়ে যাবে এতে করে কাজ হারাবে অর্ধশতাধিক আফগান নারী। ২০২১ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে নারীদের উপর নানা রকমের বিধি-নিষেধ দিচ্ছে তালিবান সরকার। বিশেষ করে নারীদের উচ্চ শিক্ষা ও জনসন্মুখে অবাধ উপস্থিতি চরম সীমাবদ্ধ করে দেয়া হয়েছে। এমন কি গণগোসল খানার যে চর্চা দেশটিতে প্রচলিত সেটিও দেশটিতে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সর্বশেষ ৩ সপ্তাহ আগে নারীদের জন্য সব ধরণের বিউটি পার্লার বন্ধের ঘোষণা দেয় তালিবান সরকার।
শেখ মোহাম্মদ খালিদের (পুণ্য প্রচার ও অপকর্ম প্রতিরোধ প্রধান) মতে প্রথমত এই খারাপ অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে এই বিউটি পার্লারগুলোতে প্রচুর অর্থ অপচয় করা হয়। এছাড়াও শরিয়া অনুসারে একজনের চুল সাজানোর জন্য অন্য জনের চুল ব্যবহার করার অনুমতি নেই। আর সর্বোপরি এ পার্লারগুলোতে নারীদের ভ্রু তোলা হয় যা সর্বোপরি শরিয়া বিরোধি। আফগান নারীদের মতে দিনে দিনে তাদের কোন না কোন ভাবে সমাজ থেকে নির্মূল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তারা স্কুল বিশ্ববিদ্যালয় এবং নারীদের চাকুরি নিষিদ্ধ করেছে। আর দিন দিন তারা এই নিষেধাজ্ঞা বাড়াচ্ছে।
আফগানস্থানের চেম্বারস অফ কমাসের্র মতে এই সিগ্ধান্ত আফগানিস্থানের ৬০ হাজারেরও বেশি নারীকে প্রভাবিত করবে। এদের বেশির ভাগই পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। পাশাপাশি এর সঙ্গে জড়িত ১২ হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হবার উপক্রম।
তালিবান শাসিত আফগান নারীদের জন্য বিউটি পার্লার শুধুই রূপ চর্চার জায়গা না। তালিবানের দেয়া বিধি-নিষেধের পর থেকে নারীদের বাইরের জগতের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ এই বিউটি পার্লার। আর্ন্তজাতিক শ্রমসংস্থা ‘আই এন ও’ এর সব শেষ প্রতিবেদন অনুসারে ২০২২ সালের শেষ ৩ মাসে চাকুরির ক্ষেত্রে নারীদের অংশ গ্রহণ ২৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। এতে করে ২ লাখ ৬৫ হাজার নারী চাকুরি হারিয়েছেন। যার সংখ্যা নতুন বিধিনিষেধের সঙ্গে আরও বাড়ার শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা
এনবিএস/ওডে/সি


